Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

কিশোর কুমারের জীবনী | Kishore Kumar Biography in Bengali

কিশোর কুমারের জীবনী
Kishore Kumar Biography in Bengali


নাম

কিশোর কুমার/Kishore Kumar

জন্ম

৪ই আগস্ট ১৯২৯, মধ্যপ্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত

অভিভাবক

কুঞ্জলাল গাঙ্গুলী (বাবা)
গৌরী দেবী (মা)

দাম্পত্য সঙ্গী

রুমা গুহ ঠাকুরতা (১৯৫০-৫৮)
মধুবালা (১৯৬০-৬৯)
যোগিতা বালী (১৯৭৬-১৯৭৮)
লীনা চন্দাভারকর (১৯৮০-৮৭)

সন্তান

অমিত কুমার
সুমিত কুমার

ধর্ম

হিন্দু

জাতীয়তা

ভারতীয়

পেশা

গায়ক, প্লেব্যাক গায়ক, গীতিকার, সুরকার, অভিনেতা, স্ক্রিপ্ট লেখক, চিত্রনাট্য লেখক, চলচ্চিত্র পরিচালক,

মৃত্যু

   ১৩ই অক্টোবর ১৯৮৭, মহারাষ্ট্র

ভারতীয় সঙ্গীত জগতের শ্রেষ্ঠ সব গায়কদের মধ্যে বাঙলীর গর্ব কিশোর কুমার ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ | তাঁর মতো দূর্দান্ত প্রতিভাশীল গায়ক আর হয়তো ভারতের বুকে কেউ জন্মাবে না | তিনি ছিলেন একধারে যেমন গায়ক তেমনই অন্যদিকে ছিলেন একজন গীতিকার, সুরকার, চিত্রনাট্যকার, অভিনেতা, চলচ্চিত্রকার, রেকর্ড প্রযোজক এবং পরিচালকও | তাঁকে আজও ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এবং সফল প্লেব্যাক গায়ক হিসাবে মনে করা হয় |

Early life of Kishore Kumar:

কিশোর কুমারের জন্ম হয় ৪ই আগস্ট ১৯২৯ সালে, মধ্যপ্রদেশের খাণ্ডোয়া জেলায় | তাঁর বাবার নাম ছিলো কুঞ্জলাল গাঙ্গুলী এবং মায়ের নাম ছিলো গৌরী দেবী | তাঁর বাবা কুঞ্জলাল গাঙ্গুলী ছিলেন পেশায় একজন উকিল এবং মা গৌরী দেবী ছিলেন সাধারণ একজন গৃহকর্ত্রী |

তুমি হয়তো এটা জানলে অবাক হবে, ছোটবেলা থেকেই কিশোর কুমারের নাম কিন্তু কিশোর কুমার মোটেই ছিলোনা | তাঁর আসল নাম ছিলো আভাস কুমার গাঙ্গুলী|

তাঁর মোট দুই ভাই এবং এক দিদি ছিলো, যাদের নাম যথাক্রমে-  অশোক কুমার, সীতা দেবী এবং অনুপ কুমার | তাঁদের মধ্যে সবথেকে ছোট ছিলেন এই কিশোর কুমারই |

জানা যায়, কিশোর যখন ছোট ছিলেন তখন বড় দাদা অশোক কুমার বলিউড জগতে খুব ভালো সাফল্য পান, যারফলে ছোট কিশোরের মধ্যে দাদার সেই সফলতা বিশেষ প্রভাব ফেলে | তিনি এরপর ধীরে ধীরে হিন্দি গান, হিন্দি চলচ্চিত্র ইত্যাদির প্রতি নিজের ইন্টারেস্টকে বাড়াতে থাকেন এবং বিখ্যাত গায়ক কুন্দন লাল সায়গলের একজন বড় ভক্ত হয়ে ওঠেন |

শোনা যায় তিনি নাকি ছোটবেলায় বাড়িতে বলিউড সিনেমায় খ্যাত অনেক গায়কদের গান নকল করে গাইতেন | এই নকল করে গান করাটাই ছিলো তাঁর কাছে একটা শখের মতো | এছাড়াও তিনি করতেন ইওডেলিং (Yodeling) অর্থাৎ এমন এক প্রকারের গান যেখানে বিভিন্ন পিচে সুর করে গাইতে হয় | তুমি চাইলে ইন্টারনেটে সার্চ করে এই ইওডেলিং সম্পর্কে আরো ভালো করে বিস্তারিত ভাবে জেনে নিতে পারো |

Work life of Kishore Kumar:

কিশোর কুমারের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৪৯ সাল থেকে | সেইবছর তিনি প্রথমবারে জন্য দেবানন্দ অভিনীত “জিদ্দি” নামের সিনেমায় গান গেয়েছিলেন | এরপর ১৯৫১ সাল থেকে তিনি বলিউডের বিভিন্ন সিনেমায় অভিনয়ও করেন | তাঁর অভিনীত কিছু সিনেমার নাম হলো- নকরি, চালতি কা নাম গাড়ি, হাফ টিকিট, নিউ দিল্লী,  আশা, পারোসান,  ঝুমরু ইত্যাদি |

তিনি শুধু এই সিনেমাগুলোয় অভিনয়ই করেননি বরং সেইসাথে করেছিলেন গানও | ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত তিনি শুধু নিজের জন্য আর দেবানন্দের সিনেমার জন্য গান গাইতেন কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি যখন একটু জনপ্রিয় হন তখন তিনি অন্যান্য অভিনেতাদের সিনেমায়ও গান করতে শুরু করেন |

তিনি আসলে সত্যি কথা বলতে গান করতেই ভালোবাসতেন, সিনেমায় অভিনেতা হওয়ার তাঁর কোনো ইচ্ছাই ছিলোনা কিন্তু বড় দাদা অশোক কুমারের বলিউড সিনেমা জগতে অনেক চেনা-পরিচিত ছিলো বলে, তাকে অনেক পরিচালকরা এমনিতেই সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ দিয়ে দিতেন |

কিন্তু দর্শকরা তাঁর অভিনয় তেমন একটা পছন্দ করতো না আর তিনিও দর্শকদের মনে অভিনয়ের মাধ্যমে জায়গা করে নিতে পারেননি প্রথম দিকে, সেই কাজে পুরোপুরী বিফল হন | অবশ্য, তিনি যতগুলো সিনেমা করেছিলেন তার প্রত্যেকটাতেই তিনি গান অবশ্যই গেয়েছিলেন |

আরো পড়ুন: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী

প্রথমদিকে কিশোর কুমার, কুন্দন লাল সায়গলের নকল করে গাইতেন যেটা দেখে শচীন দেব বর্মন তাঁকে এই নকল করে গান গাওয়ার অভ্যাসকে পরিত্যাগ করতে বলেন, এবং পরামর্শ দেন নিজের স্টাইলে গান গাওয়ার |

এই পরামর্শটাই তাঁকে তাঁর জীবনে এক নতুন দিশা দেখায় |

এরপর তিনি গানের বিষয়ে প্রচুর অনুশীলন করেন এবং অবশেষে নিজের স্টাইলে গান করতে সক্ষম হন | তিনি এমন এক কায়দা উদ্ভাবন করেন গান গাওয়ার, যা সেই সময়ের অপর দুই বিখ্যাত গায়ক মহম্মদ রফি এবং মুকেশের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ছিলো; যেটা সবাইকে আশ্চর্য্য করে তোলে |

তিনি গলাকে ভেঙ্গে আশ্চর্য্য এক ভঙ্গিমায় গান করতেন যা শুনতে সত্যি দারুন এবং মজাদার লাগতো, দর্শকরাও তাঁর গান শুনে ভীষন আনন্দ পেতেন | ফলে খুব তাড়াতাড়িই তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের এক পৃথক জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হন, এত শ্রেষ্ঠ সব গায়করা থাকা সত্বেও | এছাড়াও তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত কমেডি নায়ক হিসাবেও দর্শকদের মাঝে জনপ্রিয় হন । তিনি তাঁর গানের পাশাপাশি নিজের অভিনয়ের দক্ষতাকেও এতটাই পরিপূর্ণ করে তোলেন যে তাঁর অভিনয়ের কায়দাও অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে ওঠে ।

সত্যি কি অসাধরণ মানুষ তাইনা | যেই দুটো জিনিস তাঁর জীবনের সবথেকে বড় দূর্বলতা ছিলো, সেই দুটোকে তিনি এমন ইমপ্রুভ করে দেখালেন যে আজও সারা ভারতবাসী সেইসবকে ভুলতে পারছেনা |

সে যাই হোক আবার আসল কথায় ফিরে আসি!

১৯৬৯ সালে শক্তি সামন্তের পরিচালনায় “আরাধনা” নামক সিনেমা মুক্তি পায় এবং সেই সিনেমায় মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন রাজেশ খান্না | এই সিনেমায় কিশোর কুমার তিনটে মাত্র গান করেন যেগুলো যথাক্রমে- “কোরা কাগজ থা ইয়ে মন মেরা”, “মেরে সপনো কি রানী”, “রূপ তেরা মস্তানা” । এই তিনটে গানই তাঁর এতটাই সাফল্য পায় যে এরফলে তাঁকে আর নিজের কর্মজীবনে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি | এই তিনটে গানই দর্শকদের মন মাতাতে একবারে সক্ষম হয় |

এরপর তাঁর জীবনে সাফল্যের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়, একের পর এক সিনেমায় গান করার অফার তাঁর কাছে আসতেই থাকে | তিনি সেইসময়কার বিখ্যাত সব নায়ক যেমন- ধর্মেন্দ্র,  রণধীর কাপুর, রাজেশ খান্না,  শশী কাপুর এবং দেবানন্দ প্রত্যেকের সিনেমাতেই কাজ করেন এবং প্রচুর হিট গান দেন |

তাঁর গাওয়া বিখ্যাত কিছু হিন্দি গান হলো যথাক্রমে:

এক চাতুর নর, মেরে সামনে ওয়ালি খিড়কি মে (পারোসান),ছোটা সা ঘার হোগা বাদাল কি ছাও মে (নকরি), ইনা মিনা ডিকা (আশা), পাঁচ রুপিয়া বারা আনা, এক ল্যার্কি ভিগি ভাগি সি (চালতি কা নাম গাড়ি), চিল চিল চিল্লাকে (হাফ টিকিট), দুখি মান মেরে (ফানটুস), জিন্দগেী এক সাফার (আন্দাজ),ও মাঝি রে (খুশবু) ইত্যাদি |

তাঁর গাওয়া বিখ্যাত কিছু বাংলা গান হলো যথাক্রমে:

আমার মনের এই ময়ূর মহলে, এই যে নদী, এই তো জীবন, হাওয়া মেঘ সরায়ে, কি আশায় বাঁধি খেলাঘর, এক পলকের একটু দেখা, তোমায় পড়েছে মনে, নীল নীল আকাশে, প্রেমের খেলা কে বুঝিতে পারে, এ আমার গুরুদক্ষিণা ইত্যাদি |

Marriage life of Kishore Kumar:

কিশোর কুমারের বৈবাহিক জীবন বেশ বৈচিত্রময় | তিনি মোট ৪ বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন | রুমা গুহঠাকুরতা (১৯৫০-১৯৫৮), মধুবালা (১৯৬০-১৯৬৯),  যোগিতা বালী (১৯৭৫-১৯৭৮) এবং লীনা চন্দাভারকর (১৯৮০-১৯৮৭) এই চারজনই ছিলেন তাঁর একসময়কার স্ত্রী |

কিশোর কুমারের মোট সন্তান সংখ্যা ছিলো দুটো | বড় ছেলে অমিত কুমার ছিলেন রুমা গুহ ঠাকুরতার সন্তান এবং ছোট ছেলে সুমিত কুমার ছিলেন লীনা চন্দাভারকরের সন্তান |

Death of Kishore Kumar:

অবশেষে ১৩ই অক্টোবর, ১৯৮৭ সালে মাত্র ৫৮ বছর বয়সে কিশোর কুমারের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় | জানা যায়, মৃত্যুর আগের দিন অর্থ্যাৎ ১২ই অক্টোবর তারিখে, তিনি রেকর্ডিং ষ্টুডিওয় এসে গানও রেকর্ড করে গেছিলেন |

সত্যিই! নিশ্বাসের যে কোনো ভরসা নেই; যখন তখন সেটা যেখানে সেখানে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, তাঁর মৃত্যুই এখানে সবচেয়ে বড় প্রমান | এমন একজন উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ককে সিনেমা জগৎ তথা ভারতীয় সঙ্গীত প্রেমীরা কোনদিন ভুলতেই পারবেনা এবং তাঁর ফাঁকা স্থানকেও যতই বড় সঙ্গীতজ্ঞ আসুক না কেন আজকের মর্ডান দুনিয়ায়, তারাও পূরণ করতে পারবেনা |

আরো পড়ুন: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনী

তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন, আজও সর্বশ্রেষ্ঠ আছেন এবং ভবিষ্যতেও সর্বশ্রেষ্ঠই থাকবেন আমাদের প্রত্যেকের মনে | ভারতীয় সঙ্গীত জগতে তাঁর বিকল্পের কথা এবং সেইসাথে অবদানের কথা আমরা কোনোদিনই কল্পনাও করতে পারবোনা ও ভুলতেও পারবোনা, অন্তত আমি তো নাই|

আশা করি তুমি “Kishore Kumar Biography in Bengali” পড়ে নিশ্চই অনেক কিছু সুন্দর তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছো | পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটু Comment করে তোমার মতামত আমায় জানিও | তোমার মূল্যবান মতামত আমাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাতে ভীষনভাবে সাহায্য করে |

The post কিশোর কুমারের জীবনী | Kishore Kumar Biography in Bengali appeared first on Ajob Rahasya.

Share the post

কিশোর কুমারের জীবনী | Kishore Kumar Biography in Bengali

×

Subscribe to মস্তিষ্কের অবচেতন ভাগের ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় |how To Unlock Subconscious Mind Power In Bangla

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×