Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

যে কথা বলতেই হবে - গুন্টার গ্রাস

এইসব যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়, যেখানে স্পষ্টতই আমরা ক্রীড়নক
আর টিকে থাকার প্রশ্নে ব্যবহৃত হচ্ছি
কেবলই কিছু পাদটীকা স্বরূপ__
সেখানে, কেন নীরব ছিলাম আমি? নিশ্চুপ, এতোটা কাল?

যে কথা বলছি,
সেটাই হলো প্রতিরোধমূলক আগ্রাসন কর্তৃক প্রথাগত অধিকারের দাবী,
হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা আস্ফালনে আর দানাবদ্ধ হয়ে ওঠা উল্লাসধ্বনিতে,
যা কিনা মুছে দিতে পারে ইরানী জনতাকে,
এ্ই অযুহাতে যে, তার কর্মদক্ষতা জুড়ে ওই এলাকায়
তৈরি হচ্ছে পারমাণবিক অস্ত্রসমূহ।

এবং অতঃপর, কেন আমি নিবৃত রাখবো নিজেকে
অপরাপর দেশসমূহের নামোচ্চারণ থেকে,
যেখানে, বছরের পর বছর__ হোক তা আচ্ছাদনে ঢাকা__
লাগামহীনভাবে প্রবৃদ্ধিরত পরমাণু অস্ত্র
বেড়েই চলেছে সানুক্রমিক, কেবল,
কোনও পরিদর্শনই তার নাগাল পচ্ছে না ব'লে?

উপলব্ধি বলছে, এই প্রশ্নে প্রত্যেকেই নীরব
আর আমার নৈঃশব্দ্যও ওই নীরবতারই গোলামী করছে,
যেন এর সবই দমিত মিথ্যা আর বিধি-নিষেধ, যা শাস্তিকেই জানায় আমন্ত্রণ,
এই সবে কোনও মনোনিবেশ নেই আমাদের;
ফলে তো, "ইহুদি-বিদ্বেষ" এক সাধারণ রায়ে পরিণত হলো!

এবার শোনো, যখন্ই আমার দেশ
সময়ে সময়ে স্পর্শ করেছে অনন্য ও স্বতন্ত্র অপরাধসমূহ,
তার ন্যায্যতা প্রতিপাদনে হয়েছে স্বয়ং সচেষ্ট,
আর যদি কেবলই নির্ভেজাল বণিকী উদ্দেশ্যপ্রণোদনাতেও হয়__ কিংবা
ধরো, আমাদের জিহ্বা দ্রুত নড়ে উঠলো এই বলে যে, এটা "ক্ষতিপূরণ"__
তা সত্বেও, যেখানে কোনও পরমাণু অস্ত্রের অস্তিত্ব প্রমানিতই নয়
বরং কী প্রমাণিত হলো তার ব্যাখ্যাও স্পষ্ট নয়;
তাদেরই বিরুদ্ধে বিধ্বংসী যুদ্ধযাত্রাকে সক্ষম করে তুলতে
আরও একটা সাবমেরিন ইসরায়েলে পাঠানো কি সমীচীন?
আমি সেটাই বলছি, যা বলা আবশ্যকীয়।

কেন আমি নীরব থেকেছিলাম গতকাল অব্দি?
কেননা, আমার আদিপুরুষের পরিচয় বিষয়ক ভাবনা
একটা অস্পষ্ট আঁচড়ের ভার নিয়ে অপেক্ষায় ছিলো
সেই সত্যকে এড়াতে, যা ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষণায় উচ্চকিত হয়
যে, প্রকারান্তরে আমারও থেকে থাকতে পারে সম্পৃক্ততা, আর ইহুদি-বিদ্বেষ।

কেন আমি এটা বলছি কেবল আজকের এই পর্যায়ে
এই বার্ধক্যে আর আমার কলমের ফুরিয়ে আসা কালিতে:
ইসরায়েলের পরমাণু শক্তি
গোটা বিশ্ব-শান্তির পক্ষে হুমকী, শুধু কি এই জন্য?
বলছি, এ কারণে যে, আজই বলা অত্যাবশ্যক,
নইলে, আগামীকাল হয়ে উঠবে এ সব বলার পক্ষে যথেষ্ট বিলম্বের;
বলছি, কেননা, জার্মান হিসেবে এবং অতীতের
অপরিমেয় ভুলভ্রান্তি ঘটে যাবার যন্ত্রণা নিয়েই__
সম্ভাব্য অপরাধ সংঘটনের আগেই আমরা তো সচেতন হতে পারতাম!
নইলে, কোনও অযুহাতই আমাদের পাপের কালিমা মুছতে পারবে না।

এবং স্বীকার করছি আমি: আর নির্বাক থাকবো না
কেননা, পশ্চিমা ভণ্ডামী অনেক দেখেছি আমি;
কেননা, আমি বিশ্বাস করি,
এই নির্মম নীরবতা থেকে নিস্কৃতি পেতে চায় আরও অনেকেই,
বলছি, অস্বীকারের স্বীকৃত ঝুঁকি অবলোপনে, ইসরায়েলি
পরমাণু অস্ত্রের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আর বিলুপ্তি চেয়ে
আর ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলি পরিচালিত হবে
সেদেশের সরকার কর্তৃক এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্ববধানের যৌথতায়।

কেবল এভাবেই, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন এবং প্রত্যেকেই,
সমস্ত জনতা, যেখানেই দাঁড়িয়েছে বৈরিতা নিয়ে পরস্পরের মুখোমুখি,
পাগলামি অধিকৃত দেশে দেশে___
তারা বেরিয়ে আসার একটা পথ খুঁজে পাবে,
এই একই কথা আমাদের জন্যেও খাটে।
Copyright © 2005, Khorshed Khokon, MBA


This post first appeared on Khorshed Khokon, please read the originial post: here

Share the post

যে কথা বলতেই হবে - গুন্টার গ্রাস

×

Subscribe to Khorshed Khokon

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×