থ--ব
দিলকুশা: নবাব স্যার সলিমুল্লাহ’র ভগ্নিপতি নবাব আজিম মিয়া মতিঝিলের সাধারণ বীমা ভবনের স্থানে একটি মনোহারী কুঠি নির্মাণ করে এর নাম দিয়েছিলেন দিলকুশা। কুঠিবাড়ির ভেতরে ছিল সুদৃশ্য পুকুর। পুকুরে ছিল কুমির। প্রতিদিন ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দিলকুশা ভবন দর্শনে আসত পর্যটকরা। সাতচল্লিশের দেশবিভাগের সময় সর্বপ্রথম অবহেলার স্বীকার হয় এই ভবন। দিলকুশা ভবন ধ্বংস করে দিয়ে পুকুর ভরাট করে ফেলা হয়। কুঠিবাড়ির একটি প্রাচীন মসজিদ আর নবাব পরিবারের কয়েকটি কবর ছাড়া আজ আর কোথাও দিলকুশার চিহ্নমাত্র নেই।
Related Articles
দোলাইগঞ্জ: প্রাক-মুঘল যুগে ঢাকা এখনকার মতো সমতল ছিল না। নানা জায়গায় নালা, ডোবা ও ঝিলের মতো ছিল। এসব জায়গায় বর্ষার পানি কমলে মশা-মাছি ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যেত। ফলে তখনকার ঢাকায় কলেরা-বসন্ত, ডায়েরিয়া লেগেই থাকতো। পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নে ইসলাম খাঁ বুড়িগঙ্গা থেকে একটি কৃত্রিম খাল খনন করান। খালটি ঔপনিবেশিক আমলে ১৮৬৪ এবং ১৮৬৫ সালে ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়। ১৯৬৭ পর্যন্ত দোলাই খাল ছিল বেশ বড় খাল। দোলাই খালের নামানুসারে একটি এলাকায় খালের পূর্বপাড়ে যেখানে নানারকম জিনিসপত্র বেচাকেনা হতো তা ‘দোলাইগঞ্জ’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
১৯০৪ সালে Fritz Kapp এর তোলা দিলকুশা গার্ডেনসহ দিলকুশা প্রাসাদের ছবি। |
ধোলাই
খাল: ঢাকা শহরের বাণিজ্যিক ও ব্যস্ততম খাল ছিলো এটি, যার সরাসরি
বুড়িগঙ্গা হয়ে বিশ্বের যোগাযোগ ছিল। খালের দুধারে ছিলো কাঠের আসবাবপত্রের
দোকান এবং ধোপাঘর। কাঠের সামগ্রী আর ধোপারা কাপড় ধুতো সেখানে। সে থেকেই
“ধোলাই খাল”।
বিজয়নগর: পুরানা পল্টন চৌরাস্তা থেকে যে রাস্তাটি কাকরাইলের দিকে গেছে তার মাঝামাঝি অংশে একটি পানির ট্যাঙ্ক রয়েছে। এই এলাকাটি ‘বিজয়নগর’ নামে পরিচিত। বিজয়নগরের নামকরণ করা হয়েছে বিজয় থেকে। কিন্তু এখানে কোনো যুদ্ধ হয়েছিল কিনা তা জানা যায়নি। অন্য মতে, বিজয় বাবু নামে কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তি এই মহল্লা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর নামানুসারেই হয়তো বিজয়নগরের নামকরণ করা হয়েছে।
বেগমবাজার:
এই এলাকার নামকরণে সবচেয়ে জনপ্রিয় ইতিহাস হল, ১৯৩৯-১৯৪০ সালে সরফরাজ খান
ঢাকার নায়েব-এ-নাজিম ছিলেন। তার মেয়ে ছিল লাডলি বেগম। অনেকের মতে তার নামেই
এই এলাকার নামকরণ হয়। বেগমবাজার মসজিদের কাছাকাছি অবস্থিত বাজারটিও তার
মালিকানাধীন ছিল। বাজারটি ১৯৭৭ সালে অগ্নিদগ্ধ হয়। অতঃপর কিছু বর্ধিত ভাতার
বিনিময়ে সরকার লাডলি বেগমের কন্যা পুন্নী বেগম ও হাজি বেগম থেকে এর
মালিকানা গ্রহণ করেন।