Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফুঁসে উঠেছে। সোমবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বাম তীরের চরখড়িবাড়ি এলাকার দেড় কিলোমিটার বালুর বাঁধের ১০০ মিটার বিধ্বস্ত হয়েছে।

বিধ্বস্ত বাঁধের ভেতর দিয়ে নদীর পানি চরে প্রবেশ করায় সেখানকার প্রায় দেড়শতাধিক বিঘার আমন ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে বলে চরের কৃষকরা জানিয়েছে। এ ছাড়া নদীর ডান তীরের প্রধান বাঁধ ঘেঁষে নদীর পানি প্রবাহিত হওয়ায় সেখানকার ৫০ বিঘা জমির আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পানি হুহু করে বেড়েই চলেছে।

এদিকে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে বলে নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা প্রিন্স জানান। তিনি বলেন, সকাল থেকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার (৫২.৬০) দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা বেলা ৩টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল।

ভারতীয় অংশের তিস্তা নদীর ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সোমবার ভোর ৪টা থেকে তিস্তা নদীর পানি দো-মহনী পয়েন্টে বিপৎসীমা (৮৫.৯৫) অতিক্রম করে। যা সকাল ৭টায় বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার (৮৬.১৮) ওপর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। তবে দুপুর ২টায় দো-মহনী পয়েন্টে তিস্তার পানি কমে বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ভারতের সেই পানি বাংলাদেশের ডালিয়া পর্যন্ত ধেয়ে আসতে প্রায় ৭ ঘণ্টা সময় লাগে। সে হিসাবে সেই ঢল প্রবেশ করেছে বাংলাদেশের কালীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট দিয়ে।

এদিকে উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় পানি অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার চর এলাকাগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। অবশ্য ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল নেমে আসায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে তিস্তা নদী।

চরখড়িবাড়ি এলাকার মানুষজন জানায়, বাম তীরে যে বালির বাধটি রয়েছে সেটি তারা স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করেছিল ৫ বছর আগে। ওই বাঁধ টিকিয়ে রাখার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে প্রভাবশালীরা ওই বালির বাঁধ ঘিরে বোমা মেশিন বসিয়ে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন করায় উজানের ঢলে আজ বাঁধটির ১০০০ মিটার বিধ্বস্ত হলো। এলাকাবাসী প্রভাবশালীকে চিহ্নিত করে তার বোমা মেশিন জব্দ ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছে।

এ ব্যাপারে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, উজানের ঢল ও নদীর পানি বাম তীরে চাপ বেশি থাকায় বালির বাঁধটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

অপর দিকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নীলফামারীর ২২টি চর প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, তার এলাকার প্রায় ৭০০ পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।

খগাখড়িবাড়ি এলাকায় সারে ৩শত পরিবার, টেপাখড়িবাড়ি এলাকায় হাজার পরিবার, খালিশাচাঁপানী এলাকায় ৪০০ পরিবার, ঝুনাগাছচাপানী এলাকার সাড়ে ৩০০ পরিবারের বসত ভিটা তলিয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছে। বিশেষ করে খালিশাচাঁপানী এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। মানুষজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

ভেন্ডাবাড়ি এলাকার জলিল মিয়া জানিয়েছেন, নদী ভাঙনে ভিটেমাটি সব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চোখের সামনে নদীর পানির স্রোত সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

ভিটেমাটি আর ঘরবাড়ি হারিয়ে ভেন্ডাবারী এলাকার মনজিলা বেগম জানিয়েছেন, আমার একটা ঘর ছাড়া আর কিছুই নিয়া আসতে পারি নাই। স্রোতে সব ভেসে গেল।

বার্তা কক্ষ, ১ আগস্ট ২০২২



This post first appeared on ChandpurTimes, please read the originial post: here

Share the post

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে

×

Subscribe to Chandpurtimes

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×