ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নেতাদের বরণ করা নিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।
Related Articles
একই সঙ্গে ভিসির চেয়ারের মতো সম্মানজনক পদে থেকে সরাসরি একটি ছাত্র সংগঠনের র্যালিতে ফুলের মালা গলায় দিয়ে উপস্থিত থাকা কতটা সমীচীন সে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।
ফুলেল শুভেচ্ছা নিলেও র্যালিতে অংশ নেওয়ার কথা বেমালুম অস্বীকার করেছেন ড. মীজানুর রহমান।
ছবিতে দেখা যায়, জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেলকে নিজের দু’পাশে রেখে হাস্যোজ্জল অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন অধ্যাপক মীজানুর রহমান। তাদের তিনজনের গলাতেই ফুলের মালা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দায়িত্ব পাওয়ার পর তরিকুল ও রাসেলসহ নতুন কমিটির নেতারা গত বৃহস্পতিবার ভিসির সঙ্গে দেখা করেন। এরপর তিনিসহ কমিটির নেতারা মূল ভবন থেকে র্যালি করে বাংলা ডিপার্টমেন্টের সামনে আসেন।
নতুন কমিটি উপলক্ষে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এ সময় ক্যাম্পাসে আনন্দ র্যালিও বের করে। আর তাতে অংশ নেন ভিসি।
জবি ক্যাম্পাসে আলোচনা আছে, নিজ এলাকা কুমিল্লার সন্তান রাসেলের জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ বাগাতে মূল ভূমিকা পালন করেছেন অধ্যাপক মীজানুর রহমান।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের বিগত কাউন্সিলে ভিসি মীজানুর রহমান কুমিল্লার সন্তান হিসেবে কাউন্সিলর হন। আর সাধারণ সম্পাদক রাসেল তার অনুসারি এবং তিনিও কুমিল্লার সন্তান।
এ বিষয়ে ড. মীজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরিবর্তন ডটকমকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘এইটা তো ছবিই, এর আবার অন্য মানে কি? ছাত্রলীগের নতুন কমিটির ছেলেরা এসে ফুল দিয়েছে, এটা বলতে চাচ্ছেন তো?’
এরপর অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ‘এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। অবাক হওয়ার কিছু নেই। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
ভিসির চেয়ারে থেকে এটা একটু দৃষ্টিকটু কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভিসির চেয়ার তো আর কোনো মহাপুরুষের তত্ত্ব না যে তাতে বসলে ফুল নেওয়া যাবে না। ফুল তো নেওয়া যেতেই পারে।’
র্যালিতে আপনি সামনে থাকায় সমালোচনা বেশি হচ্ছে- এমন প্রশ্নে মীজানুর রহমান দাবি করেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা আসার পর কোনো র্যালি হয়নি। ওখানে আমি দাঁড়াইয়া ছিলাম। ওরা (ছাত্রলীগ) গিয়া ফুল দিচ্ছে, অন্যরাও দিছে।’
এরপরই তিনি ক্ষুব্ধস্বরে বলেন, ‘এতে যদি কোনো সমস্যা হইয়া থাকে, হউক। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আর পত্রিকার যদি কোনো অসুবিধা হয়, লেখেন গিয়া এসব। ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িয়ে লিখলে আমার কিছু যায় আসে না।’
মীজানুর সমাচার
জবিতে একই সঙ্গে ১২ ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়োগ দেওয়া প্রসঙ্গে এর আগে মীজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চাকরি দিতে আমি বাধ্য। নিয়োগপ্রাপ্ত ওই ১২ জন কঠোর পরিশ্রমী নেতাকর্মী ছিলেন। এর মধ্যে দু’জন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা। এটাই তাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়।’
তাহলে সাধারণ প্রার্থীদের কি হবে এমন প্রশ্নে ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্র বা চাকরিপ্রার্থী বলতে কিছু নেই। এখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই চাকরি পাবেন। ছাত্রলীগ করাই তাদের বিশেষ যোগ্যতা।’
ভিসি মীজানুর রহমান এক সময় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। প্রথম মেয়াদে ভিসি হওয়ার পর এই পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন।
তবে গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে মীজানুর রহমান কাউন্সিলর হন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
This post first appeared on Amr Bangla - 24/7 Online News Portal, please read the originial post: here