Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

যুক্তরাষ্ট্রে ৯ ব্যক্তি পাচার করেছে ৪৫১ কোটি টাকা

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৪৫১ কোটি টাকা পাচারকারী ৯ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থপাচারকারী এই ৯ জনের মধ্যে আটজনই ব্যবসায়ী, অন্যজন সাবেক আমলা।

তাঁরা ব্যাংকিং চ্যানেলে এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে ওই অর্থ পাচার করেছেন। পাচার করা অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আইনি সহায়তা পেতে যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি ল ফার্ম নিয়োগ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করা ৪৫১ কোটি টাকাসহ দেশ থেকে পাচার হওয়া যেকোনো অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে আইনি সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যে ওই তিনটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। ওই চুক্তি সম্পাদনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ওই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া যেকোনো অর্থ ফেরত পেতে সব ধরনের আইনি কার্যক্রম পরিচালনা করবে ওই তিন মার্কিন প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে এনবিআর। প্রয়োজনে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা নেবে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক এবং স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বিস্তারিত তদন্ত শেষে ওই ৯ ব্যক্তির অর্থপাচারের বিষয়টি নিশ্চিত হয় এনবিআর। ওই অর্থ ফেরত আনতে যে তিনটি মার্কিন ল ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে, সেগুলো হলো—কাপলান, কেনেগক্স ও কেডিন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিতের নির্দেশে ওই চুক্তি হয় লস অ্যাঞ্জেলেসে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসের মাধ্যমে। এরই ধারাবাহিকতায় সাপ্লিমেন্ট লিগ্যাল সার্ভিস চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় অভিযুক্ত ৯ ব্যক্তির মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা হয়েছে। বাকি ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতাও নেওয়া যাবে। এ বিষয়ে উভয় দেশের সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

সিআইসি সূত্রে জানা যায়, চিহ্নিত অর্থপাচারকারীদের মধ্যে পাঁচজনের বাড়ি ঢাকায়, দুজনের বাড়ি চট্টগ্রামে, একজনের বগুড়ায় এবং একজনের বাগেরহাটে। ওই ব্যক্তিরা বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে থাকেন। তবে বছরের বেশির ভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে থাকেন। একজন বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর ব্যবসা করেন। একজনের যুক্তরাষ্ট্রে হোটেলের ব্যবসা আছে। দুজন তৈরি পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেন। একজন জাহাজ ভাঙার ব্যবসায় জড়িত। দুবাই ও বাংলাদেশে ব্যবসা করছেন তিনজন। অর্থপাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত সাবেক আমলা বিভিন্ন সময় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন। রাজধানীতে তাঁর একাধিক বাড়ি ও গাড়ি রয়েছে।

সূত্র মতে, চিহ্নিত ৯ জনই পাচারকৃত অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে আবাসন খাতে ব্যয় করেছেন বলে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারের একাধিক সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। তদন্তকালে দেশে-বিদেশে তাঁদের সম্পদের উত্স জানতে চাওয়া হলে তাঁরা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। ওই ৯ ব্যক্তি অন্যদেরও অর্থপাচারে সহযোগিতা করেছেন কি না এবং বাংলাদেশে সন্ত্রাসে অর্থায়নে জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।

এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘৯ ব্যক্তির পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকার আইনি পথে গেছে। আশা করছি তা ফেরত পাওয়া যাবে। ’

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ওই ৯ ব্যক্তির মধ্যে দুজনের নামে বাংলাদেশেও মামলা হয়েছে। বাকি সাতজনের নামেও মামলার প্রক্রিয়া চলছে। এক ব্যবসায়ীর নামে মামলা হয়েছে রমনা মডেল থানায়। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এ ব্যবসায়ীর আড়াই লাখ ডলার জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরেক ব্যবসায়ীর নামে ক্যালিফোর্নিয়ার সুপিরিয়র কোর্টে অর্থপাচার সম্পর্কিত মামলার ‘কেস ম্যানেজমেন্ট কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

একজনের বিরুদ্ধে গত ১৬ এপ্রিল তথ্য-প্রমাণ দাখিল করা হয়েছে আদালতে। সুপিরিয়র কোর্ট অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে সার্টিফায়েড কপি সংগ্রহ করা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসের মাধ্যমে। যথাসময়ে আয়কর রিটার্ন দাখিল না করাসহ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনা হয়েছে যে তিনি আয়কর রিটার্নে যুক্তরাষ্ট্রে অকৃষি সম্পত্তিতে অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি গোপন করে অর্থপাচার করেছেন আর গোপন করা সম্পদের ওপর ধার্য কর ফাঁকি দিয়েছেন। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে আয়কর অধ্যাদেশের ১৯৮৪-এর ১৬(সি), ১৬৫ ও ১৬৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে এবং সাক্ষ্যও নেওয়া হয়েছে।

এনবিআর সূত্র আরো জানায়, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে যাঁরা অর্থ পাচার করেছেন, তাঁদের সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বা রাজস্ব বোর্ডের কোনো কর্মকর্তা সহযোগিতা করেছেন কি না তাও যাচাই করা হচ্ছে।



This post first appeared on Amr Bangla - 24/7 Online News Portal, please read the originial post: here

Share the post

যুক্তরাষ্ট্রে ৯ ব্যক্তি পাচার করেছে ৪৫১ কোটি টাকা

×

Subscribe to Amr Bangla - 24/7 Online News Portal

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×