Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী তত্ত্ব আলোচনা করো।

The post আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী তত্ত্ব আলোচনা করো। first appeared on Ask Master and is written by Ask Master.

১৯৪০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাস্তববাদী তত্ত্বের আলোচনার সূত্রপাত। অধ্যাপক মরগানথাউ (Morgenthau) বাস্তববাদী তত্ত্ব (Realist Approach) প্রয়োগে আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। মরগেনথাউ ছাড়া ম্যুমান, কিসিংঙ্গার, রেনল্ড, স্পাইকম্যান প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ বাস্তববাদী তত্ত্ব বিকাশে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।

বাস্তববাদী তত্ত্বের সমর্থকগণ মনে করেন যে, সার্বভৌম রাষ্ট্রই আন্তর্জাতিক রাজনীতির মুখ্য কর্মকর্তা। মানুষ স্বাভাবিকভাবে স্বার্থপর। আন্তর্জাতিক রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে প্রত্যেক রাষ্ট্রই তার জাতীয় স্বার্থ সাধনের জন্যে সর্বাত্মক প্রয়াস চালায়। জাতীয় স্বার্থ সিদ্ধির শ্ৰেষ্ঠ হাতিয়ানা হল ক্ষমতা বা শক্তি (power)। শক্তির ভারসাম্য দ্বারাই বিশ্বরাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হয়। বিশ্ব রাজনীতি হল স্ব-সাহায্যপুষ্ট ব্যবস্থা এবং এই ব্যবস্থার মধ্যে রাষ্ট্র আত্মরক্ষার জন্যে নিজস্ব সামরিক বাহিনীর ওপর একান্তভাবে নির্ভরশীল।

মরগানথাউ-র নীতি

হ্যানস মরগেনথাউ বাস্তবতার কয়েকটি নীতি ব্যাখ্যা করেছেন—

  1. রাজনৈতিক সম্পর্ক কয়েকটি বস্তুগত নিয়মবিধির দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এইসব নিয়ম মানুষের প্রকৃতির মধ্যেই নিহিত।
  2. রাষ্ট্রীয় নেতৃবৃন্দ ক্ষমতার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হন।
  3. জাতীয় স্বার্থের ধারণা জাতি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষার সঙ্গে একান্তভাবে সম্পর্কিত।
  4. সার্বভৌম জাতীয় রাষ্ট্র জাতীয় স্বার্থ সাধনে যে নীতির দ্বারা পরিচালিত হয় সেক্ষেত্রে সার্বজনীন নৈতিক ধারণা প্রয়োগ করা সম্ভব হয় না।
  5. মরগানথাউ-এর মতে, রাজনৈতিক বাস্তবতা কোনো রাষ্ট্রের নৈতিক আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বিশ্ব-নিয়ন্ত্রণকারী নৈতিক নিয়মনীতির সমার্থক বলে গণ্য করা যায় না।
  6. মরগানথাউ রাজনৈতিক এলাকার স্বাতন্ত্র্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। রাজনৈতিক নিয়মের মাপকাঠিতে রাজনৈতিক কার্যাবলীর মূল্যায়ন প্রয়োজন।

কিসিংঙ্গারের মত

অধ্যাপক কুটনীতিবিদ হেনরী কিসিংঙ্গার রাজনৈতিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে মতাদর্শগত মূল্যায়ন গ্রহণ করতে পারেন নি। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষণের জন্যে তিনি দুটি মডেল উপস্থাপন করেছেন—একটি হল স্থিতিশীল ব্যবস্থা এবং অন্যটি হল বিপ্লবী ব্যবস্থা।

বাস্তববাদী তত্ত্বের সমর্থকগণ তিনটি মূল উপাদানের কথা বলে থাকেন। যথা, রাষ্ট্রবাদ (statist), অস্তিত্বরক্ষা (survival) এবং স্ব-সাহায্য (self-help)। প্রথমত, রাষ্ট্রবাদের কথা হল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সার্বভৌম জাতীয় রাষ্ট্রগুলিই বিশ্ব রাজনীতির প্রধান পরিচালক এবং প্রত্যেক রাষ্ট্র তার সার্বভৌম ক্ষমতার বলে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের চূড়ান্ত কর্তৃত্বের অধিকারী। দ্বিতীয়ত, অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়টি আরও সুস্পষ্ট। রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হল অস্তিত্ব রক্ষা। তৃতীয়ত, স্ব-সাহায্য কথাটির অর্থ হল রাষ্ট্র নিজ শক্তির বলেই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।

বাস্তববাদী তত্ত্বের সমর্থকগণ বিভিন্ন ধারার কথা উল্লেখ করেছেন — (১) কাঠামোগত বাস্তববাদ (structural realism), (২) ঐতিহাসিক বাস্তববাদ (Historical realism)—যার প্রধান প্রবক্তা মেকিয়াভেলী ও ই. এইচ. কার, (৩) উদারনৈতিক বাস্তববাদ (Liberal realism)—যার প্রধান প্রবক্তা হবস ও বুল।

সমালোচনা

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী তত্ত্বকে সকলে একমত হয়ে গ্রহণ করতে পারেন নি। বাস্তববাদী তত্ত্ব অসম্পূর্ণ এবং ত্রুটিপূর্ণ বলে সমালোচনা করা হয়। শক্তির একত্ববাদ (power monism) দ্বারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কে সব জটিলতার ব্যাখ্যা করা যায় না। স্ট্যানলি হফম্যান এই তত্ত্বকে একমুখী বা একই ভাবাদর্শ-ভিত্তিক তত্ত্ব বলে অভিহিত করেছেন। বাস্তববাদী তত্ত্ব জাতীয় শক্তির ওপর যে প্রাধান্য বা গুরুত্ব আরোপ করে, তা সহজে পরিমাপ করা যায় না। শক্তির ওপর অত্যধিক প্রাধান্য দিয়ে অন্যান্য তত্ত্ব বা দৃষ্টিভঙ্গীকে অস্বীকার করা হয়েছে। অধ্যাপক হ্যালিডে (F. Halliday) বলেছেন যে রাষ্ট্র সম্পর্কে বাস্তববাদী ধারণা অত্যন্ত বাস্তবতাবর্জিত।

The post আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী তত্ত্ব আলোচনা করো। first appeared on Ask Master and is written by Ask Master.



This post first appeared on Ask Master, please read the originial post: here

Share the post

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বাস্তববাদী তত্ত্ব আলোচনা করো।

×

Subscribe to Ask Master

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×