Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

স্যাটেলাইটের অর্থ কি? স্যাটেলাইটের কাজ,অরবিট অনুসারে স্যাটেলাইটের কাজ

 স্যাটেলাইট এর অর্থ কি?

স্যাটেলাইট এর আভিধানিক বাংলা অর্থ হল উপগ্রহ আসলে উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট বলতে আমরা বুঝি মূলত গ্রহ কে কেন্দ্র করে অনবরত নির্দিষ্ট একটি দূরত্ব বজায় রেখে গ্রহ অপেক্ষা যে ছোট বস্তু ঘুরতে থাকে তাই হল স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ। আমাদের পৃথিবীতে দু'রকমের স্যাটেলাইট রয়েছে প্রথমটি হলো ন্যাচারাল স্যাটেলাইট এবং দুই নাম্বার হলো আর্টিফিশিয়াল স্যাটেলাইট। পৃথিবীর একমাত্র ন্যাচারাল স্যাটেলাইট হল চাঁদ এবং আমাদের মানব সৃষ্ট প্রতিটি কৃত্রিম উপগ্রহ হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল স্যাটেলাইট। ২০২১ সালের পহেলা জানুয়ারি  তথ্য মতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে মোট ৩৮৬৫টি কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে মানুষ দ্বারা তৈরিকৃত স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীতে তাদের কাজের ধরন অনুসারে আকাশে তিনটি স্তরে স্থাপন করা হয়েছে। স্যাটেলাইট মূলত রেডিও তরঙ্গ সহ আরো বেশ কিছু সিগন্যাল ব্যবহার করে পৃথিবীর বুকে মহাকাশের নানারকম অদম্য চাঞ্চল্যকর ডাটা প্রেরণ করে। যে ডাটাগুলো মহাকাশ প্রেমী মানুষদের সহ আমাদের পৃথিবীর প্রায় সকলকে রহস্যের চাদরে ঘেরা কিছু চরম সত্য অতি মূল্যবান তথ্য দেয় যে তথ্যগুলো জানার পর মানুষের মন কিছুটা হলেও যেমন অজানা কিছু জানার সুবাদে মন শান্ত হয় তবে সেই শান্তভাব কে ছাপিয়ে মহাকাশ সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেক গুণে বাড়িয়ে তোলে এই স্যাটেলাইট। জানার আগ্রহ বাড়ার কারণ কি তাই ভাবছেন তো! এর কারণ হলো স্যাটেলাইট আমাদের প্রতিনিয়ত  বিস্ময়কর ও অবাক হওয়ার মতো মহাকাশ সম্বন্ধে বিভিন্ন রকম তথ্য প্রদান করছে।

পেজ সুচিপত্র সমুহঃ

  • স্যাটেলাইটের অর্থ কি
  • স্যাটেলাইট কি ভাবে কাজ করে
  • স্যাটেলাইট সংখ্যা চলমান/স্পেস যান
  • স্যাটলাইট অনুসারে কাজের ধরন
  • উল্লেখ যোগ্য তিনটি অরবিট হলো
  • লো আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট
  • মিডিয়াম আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট
  • হাই আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট

স্যাটেলাইট কি ভাবে কাজ করে

স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে উপরের অংশে স্যাটেলাইট কি তা জেনেছি। এবং তার পাশাপাশি স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে তা সামান্য পরিমাণে জেনেছি উক্ত অংশে স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে তা বিস্তারিত জানব। প্রথম যুগের পর মধ্য যুগে এসে মহাকাশ সম্পর্কে পোলিশ জ্যোতির্বিদ কোপার্নিকাস স্পষ্ট ধারণা দেন যে পৃথিবীর চারপাশে নয় বরং সূর্যের চারপাশে সূর্যকে কেন্দ্র করে তার সমস্ত গ্রহসমূহ ঘুরতে থাকে তার মতবাদের পরেই আমরা কিছুটা নিশ্চিত ভাবে ধারণা পেয়েছিলাম যে, আমাদের পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ তার কারণ নক্ষত্র কে ঘিরে যেসব নক্ষত্র অপেক্ষা ছোট বস্তু নক্ষত্র কে প্রদক্ষিণ করে সেগুলো গ্রহ তবে গ্রহ কে কেন্দ্র করে যে সকল গ্রহ অপেক্ষা ছোট বস্তু ঘুরতে থাকে তা তো উপগ্রহ হবেই। এই উপগ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানী কোপার্নিকাস এর পরেই আরো স্পষ্টভাবে প্রমাণ নিয়ে হাজির হন ইতালিয়ান বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি তার নিজস্ব টেলিস্কোপ এর মাধ্যমে সূর্যের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ আবিষ্কার করেন। টেলিযোগাযোগ, বিভিন্ন রকম লাইভ অনুষ্ঠান সম্প্রচার, পৃথিবীর উপর নজরদারি রাখা, নেভিগেট বা লোকেশন ট্রাকিং সহ আরো অনেক কাজে স্যাটেলাইটের ব্যবহার করা হয়। মূলত বিদ্যুৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ সহ আরো বেশ কিছু সিগ্নাল এর মাধ্যমে ডাটা প্রদান করে স্যাটেলাইট।স্যাটলাইট থেকে তথ্য প্রেরণ করার জন্য স্যাটেলাইট এর প্রয়োজন পড়ে অ্যান্টেনার। স্যাটেলাইটের ডাটা যাতে করে লস না হয় তাই পৃথিবীর মুখ করে স্যাটেলাইটের রিসিভার গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয় গ্রাউন্ড স্টেশন এর এন্টেনা তে ব্যবহার করা হয় কতগুলো ডিস আকৃতির এন্টেনা। তেমনি ভাবে স্যাটেলাইটের দিকে তাক করে স্থাপন করা হয়ে থাকে ভূপৃষ্ঠের গ্রাউন্ড স্টেশন এন্টেনাগুলো। স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে যেহেতু নানা রকম তথ্য বিভিন্ন সিগনালে গ্রাউন্ড এন্টেনা তে পৌঁছায় তাই যেন তথ্যসমূহের কোন ধরনের বিচ্যুতি না ঘটে তার জন্য ব্যবহার করা হয় ফিল্টার। স্যাটেলাইট হতে প্রাপ্ত তথ্য যাতে কেউ চুরি না করতে পারে তার জন্য ব্যবহার করা হয় এনক্রিপ্টর ও ডিক্রিপ্টর। সেইসাথে স্যাটেলাইট থেকে প্রেরণকৃত তথ্য অনেক পথ পাড়ি দেওয়ার পর রিসিপশনে এসে যেন দুর্বল না হয়ে পড়ে তার জন্য ব্যবহার করা হয় এমপ্লিফায়ার আরো ইত্যাদি।

স্যাটেলাইট সংখ্যা চলমান/স্পেস যান

স্যাটেলাইট সংখ্যা ২০২১ সালের প্রথম জানুয়ারির তথ্য মতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে স্যাটেলাইট সংখ্যা ৩৮৬৫। মোট স্যাটেলাইট সংখ্যা ৩৪৬৫ টি এর মাঝে বর্তমানে একটিভ স্যাটেলাইট এর সংখ্যা ১২৬৫টি এবং ইন্যাক্টিভ স্যাটেলাইট সংখ্যা হল ২৬৮০টি।স্যাটেলাইট ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে বেশি স্যাটেলাইটের অধিকারী দেশ হল USA তাদের মোট স্যাটেলাইটের বর্তমান সংখ্যা ৫২৮ টি ও চীনএবং রাশিয়া তে মোট স্যাটেলাইট রয়েছে ১৩৬টি। 

স্যাটেলাইট অনুসারে কাজের ধরন

স্যাটেলাইটের কাজ নির্ধারণ হয়ে থাকে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে নির্মিত অরবিটের উপর। স্যাটেলাইট মূলত তিনটি অরবিটে পৃথিবী কে পরিভ্রমণ করে অরবিট অনুসারে স্যাটেলাইট গুলোর কাজের ধরন ও গতি ভিন্ন হয়। 

উল্লেখযোগ্য তিনটি অরবিট হলোঃ

  • লো আর্থ অরবিট 
  • মিডিয়াম আর অরবিট 
  • হাই আর অরবিট অরবিট 

লো আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট

লো আর্থ অরবিট  স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবী থেকে এক থেকে দুই হাজার কিলোমিটারের মাঝে অবস্থান করে লো অরবিটের স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবী কে মাত্র দেড় ঘন্টার মাঝেই পরিভ্রমণ করে ঘুরে আসতে পারে লো অরবিটের স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর খুব কাছে হওয়ায় এই স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ বলের কারণে পৃথিবীপৃষ্ঠ গামী টান অনুভব করে আর এরকম গ্রাভিটেশন দূর করার জন্য লো অরবিটের স্যাটেলাইট গুলোকে খুব দ্রুতগতিতে ঘুরাতে হয়। যাতে করে কোনো রকম মধ্যাকর্ষণ টান স্যাটেলাইটের উপর প্রভাব না ফেলতে পারে। লো অরবিটের স্যাটেলাইটগুলো ঘন্টায় ১৭ হাজার কিলোমিটার বেগে ঘুরতে থাকে লো অরবিট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দূরবর্তী টেলিযোগাযোগ, টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত কোন অনুষ্ঠান আরো ইত্যাদি কাজগুলো মূলত লো আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। অর্থাৎ কোনো একটি মেইল যদি বাংলাদেশ থেকে সুদূর কানাডা বাংলাদেশের একটি এন্টেনা থেকে মেইল সিগনাল কানাডার রিসিভার এন্টেনাতে প্রেরণ করা হয় তবে এটি অনেক লম্বা পথ অতিবাহিত করার ফলে মেইলে এ বিভিন্ন তত্ত্ব লস হয়ে যেতে পারে কিন্তু লো আর্থ স্যাটেলাইট এ ধরনের সিগন্যাল গুলোকে এমপ্লিফায়ার ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে দুর্বল তথ্যকে শক্তিশালী তথ্য তে পরিণত করে রিসিভারের এন্টেনাতে প্রেরণ করে। অর্থাৎ লো অরবিটের স্যাটেলাইটগুলো থেকে প্রেরণকৃত অ্যান্টেনা এবং গ্রহণকৃত এন্টেনার তথ্যের মাঝখানে সেতুবন্ধন এর মত কাজ করে থাকে।  

মিডিয়াম আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট

মিডিয়াম অরবিট স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে কোন ক্ষুদ্র থেকে বিশাল বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করতে সক্ষম। ধরা যাক কোনো একটি বিমান আকাশে ভ্রমণ করার সময় বিমানটি ঠিক কোন দেশের কোন জায়গার উপর দিয়ে যাচ্ছে তার নির্ণয় করা হয় মিডিয়াম অরবিট  স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। একইভাবে কোন জাহাজ বা কার গাড়ি, মোবাইল ফোনসহ আরো অন্যান্য যেকোনো ডিভাইসের লোকেশন বের করতে মূলত মিডিয়াম অরবিট স্যাটেলাইট ব্যবহৃত হয়। মিডিয়াম অরবিট স্যাটেলাইটের মূল ব্যবহার হলো পৃথিবীপৃষ্ঠের যে কোন বস্তুর সঠিক লোকেশন ট্র্যাক করা। 

হাই আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট স্যাটেলাইট 

পৃথিবীর সবচেয়ে দূরের অরবিটে অবস্থানকৃত স্যাটেলাইট হাই আর্থ অরবিট ভূপৃষ্ঠ হতে ৩৬ হাজার কিলোমিটার উপরে বিদ্যমান।হাই আর্থ অরবিটের স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পুরো পৃথিবীর উপর নজরদারি করা হয়। হাই আর্থ অরবিটের স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর আবর্তনের ধারা বজায় রেখে পৃথিবীর একবার আবর্তনের সময় অর্থাৎ ২৪ ঘন্টা সময় পর পুরো পৃথিবী একবার প্রদক্ষিণ করতে পারে। পৃথিবীর আহ্নিক গতি ও হাই আর্থ অরবিট এর স্যাটেলাইট গুলোর প্রদক্ষিণের গতি একই হয়ে থাকে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পৃথিবীর যে যে জায়গা গুলোতে স্যাটেলাইট তাঁর প্রেরিত ও গ্রহণকৃত তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে তাকে সেই স্যাটেলাইটের ফুটপৃন্ট বলে। হাই আর্থ অরবিটের স্যাটেলাইটগুলো সবচেয়ে দূরে অবস্থান করায় এ অরবিটের স্যাটেলাইটগুলোর ফুটপৃন্ট অনেক বেশি হয় অন্য দুইটি অরবিটের স্যাটেলাইটগুলোর তুলনায়। হাই অরবিট স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পুরো পৃথিবীর জলবায়ু এবং বিভিন্ন জায়গার আবহাওয়ার উপর সহ পৃথিবীর কোন জায়গার ভূমির আদ্রতা খরা ভাব পর্যবেক্ষণ এবংজমিতে সঠিক পরিমাণে সার প্রয়োগের মতো বিষয়গুলো এর স্যাটেলাইট প্রেরিত তথ্যের মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়ে থাকে। 



This post first appeared on Bangladeshiweb, please read the originial post: here

Share the post

স্যাটেলাইটের অর্থ কি? স্যাটেলাইটের কাজ,অরবিট অনুসারে স্যাটেলাইটের কাজ

×

Subscribe to Bangladeshiweb

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×