শিকারী হৌলব (একটি ছোট গল্প)
অনেক অনেক দিন আগের কথা,ছোট্ট একটি গ্রাম ছিলো, নাম তার ঝুনঝুনি সেই গ্রামে লোকের বসবাস ছিল খুবই কম , গ্রামটির এক পাশে ছিল সমুদ্র, আর গ্রামটি চারিপাশে ছিল বন জঙ্গল।সেই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের রোজগারের পথ ছিল মাছ ধরা। সবাই খুব সুখে শান্তিতে..ই ছিল। সেই গ্রামের একটি ছেলের নাম হইলব। সে জঙ্গল হতে বন্য পশু পাখি শিকার করে আহার নিবারণ করতো। প্রতিদিনের মতো আজও সে স্বীকার করতে বের হলো, জঙ্গলের অনেক টা ভিতরে ঢুকে গেলো, এবং সে দুই/৩টা পাখি শিকার করে, ফিরে আসার পথে ,সে দেখতে পেলো যে, একটি সাপের বাচ্চা কে একটি ঈগল পাখি নখ দিয়ে ধরে,একটি গাছের উপর গিয়ে বসলো। সাপটি খুব ছোট এবং সাদা রঙের ছিলো,দেখতে খুব সুন্দর ছিলো,তাই সে তার তীর ঈগল কে লক্ষ্য করে ছুঁড়ে দিলো, ভয়ে ঈগল সেই সাপকে ছেড়ে, উড়ে গেল। সাপটি খুবই আহত ছিলো এবং সে নিচে পড়ে গেলো। তখন সে সাপটির শরীরের কিছু রক্তাক্ত জায়গায় খুঁজে খুঁজে কিসের যেন লতা-পাতার রস লাগিয়ে দিয়ে, সাপটিকে ছেড়ে দিয়ে, চলে আসলো। দুই দিন পর শিকারি হৌলব আবার শিকার করতে সেই জঙ্গলে গেলো, এবং আবার সেই জঙ্গলের গভীরে ঢুকে গেলো, এবং একটা সময় সেই গাছের নিচে চলে আসলো এবং সে দেখতে পায় , সেই গাছের নিচে অনেকগুলো সাপ
পেঁচিয়ে আছে,সে খুব ভয় পেয়ে গেলো, এবং সে সাথে সাথে সেখান থেকে যেই না চলে আসবে, ঠিক তখনি সে ঐ সাদা রঙের সাপটি দেখতে পেলো, এবং সে খুব সহজেই সকল সাপের মাঝ থেকে আলাদা করতে পারলো,কারন বাকি সাপ গুলোর মধ্যে একমাত্র সেই সাপটি সাদা রঙের ছিলো।তখন ঐ সাদা সাপটি আস্তে আস্তে কাছে আসলো এবং মানুষের ভাষায় কথা বলতে শুরু করলো,সে বল্লো,ভয় পেয়ো না শিকারি, আমরা কেউ তোমার কোন ক্ষতি করব না। আমার বাবা এই জঙ্গলের সাপেদের রাজা এবং আমি তাদের একমাত্র কন্যা, সেদিনের সমস্ত ঘটনা, আমি আমার বাবাকে বলেছি, তাই সে তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছে, তুমি যদি আমাকে বিশ্বাস করো,তবেই তুমি আমাদের সাথে আসতে পারো । তখন শিকারি হৌলব তাদের সাথে চলতে লাগলো। তখন সেই সাপ রাজকন্যা বললেন শোন বন্ধু, আমার বাবা তোমাকে হয়তো মূল্যবান ধনরত্ন দিতে চাইবেন, কিন্তু তুমি সেগুলোর কিছুই নিবে না, তুমি চ
আমার বাবার মুখে যে রত্ন লুকানো আছে, সেটাই চাইবে, তারপর তারা একসময় সাপেদের লুকানো রাজ্যে প্রবেশ করলো ।
সে চারিদিকে শুধু সাপ আর সাপ দেখে, ভয়ে ভয়ে পথ চলতে লাগলো। তারপর তারা সাপেদের রাজার সামনে হাজির হলো, এবং মানুষদের মতো কথা বলে,একে অপরকে কুসল বিনিময় করেন। তারপর রাজা তাঁকে অনেক সমাদর করলো, এবং সেই সাথে অনেক ধনরত্ন উপহার দিলেন কিন্তু হৌলব সেগুলো কিছুই নিতে চাইলেন না,রাজা বললেন তুমি কি চাও? বলো আমাকে , আমি তাই তোমাকে দিতে চেষ্টা করবো,তখন হৌলব তার মুখের মধ্যে লুকানো সেই রত্ন টি চাইলেন,রাজা জবান দিয়ে জবান নষ্ট করে না, তাই রাজা বাধ্য হয়ে রত্ন টি দিলেন এবং বললেন,এই রত্নের গুন সম্পর্কে, এই রত্ন যার কাছে থাকবে,সে পৃথিবীর সমস্ত পশু - পাখির কথা বুঝতে পারবে, কিন্তু এই কথা সে কাউকে বলতে পারবে না যদি বলে,সে সাথে পাথর হয়ে যাবে। তারপরে হৌলব সবার হতে বিদায় নিয়ে চলে আসলো। তার কয়েক দিন পর - আবার সে শিকার করতে সেই জঙ্গলে গেলো এবং এখন তার সাথে থাকা রত্নটির কারনে সকল পাখিদের কথপোকথন বুঝতে পারে, এবং একসময় শিকার করে বাসায় ফিরে আসে, এভাবেই চলতে থাকে। সব দিনের মতো আজও সে শিকার করতে সেই জঙ্গলে গেলো এবং দূরে হতে সে শুনতে পায় ,এক পাখি আরেক পাখিকে আজ সন্ধ্যার আগেই এই গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলছে, তাঁরা আরো বল্লো - আজ রাতেই এই মানুষগুলো যদি এই গ্রাম ছেড়ে না যায়,তবে সবাই মারা পড়বে। কারন আজ মধ্য রাতে জলোচ্ছ্বাসে এই পুরো গ্রাম তলিয়ে যাবে, সেই সাথে এই জঙ্গল ও ।
এই কথা শোনার পর থেকে,হৌলব আর শিকার করতে পারলো না , সে দ্রুত গ্রামে চলে গেলো এবং সবাই কে জড়ো করে,আজ রাতের মধ্যেই,এই গ্রাম ছেড়ে, চলে যেতে বললেন। কিন্তু কেহই তার কথা বিশ্বাস করতে চাইলো না। অনেকে বললেন - তুমি আগেভাগে কি ভাবে জানলে,যদি তার প্রমাণ দিতে পারো, তবেই সবাই, তোমার কথামত এই গ্রাম ছাড়বে। তখন হৌলব গ্রামের সবার জীবন বাঁচাতে, সেই রত্ন সবাই কে দেখালো, এবং সেই সাথে প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত সবকিছুই গ্রামবাসীর কাছে বললেন। এবং সাথে সাথে পাথর হয়ে গেলো। সাথে সাথে গ্রামের সবাই দ্রুত গ্রাম ছাড়লো । মাঝ রাতে পুরো গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেলো, এবং সবাই প্রাণে বেঁচে গেলেন। সবাই তার জন্য অনেক অনেক দোয়া করলেন, এবং সেই গ্রামের সবাই মিলে তার মতো দেখতে একটি মূর্তি স্থাপন করলেন।আর গ্রামের সেই সরল বালকটি নিজের জীবন দিয়ে, সবার জীবন রক্ষা করলেন।
ধন্যবাদ -
Related Articles
themidnightcrow77.blogspot.com
This post first appeared on উনà§à¦®à§à¦•à§à¦¤ বà§à¦²à¦—, জীবনে ঘটে যাওয়া কিছৠঘটনা।, please read the originial post: here