নিজস্ব প্রতিবেদন : মেঘেদেরও মন খারাপ হয়। তারাও ফিরে ফিরে আসে পাহাড়ের বাঁকে, উপত্যকার খাঁজে, কিশোরীর গালে বা গৃহস্থের চালে। কখনও হাসে, কখনও কাঁদে, কখনও বা জল হয়ে নেমে আসে বিয়াসের জলে। অসময়ের স্নানে সতেজ হয়ে ওঠে দিকবিদিক। সাদা মেঘ খেলা করে ঢাল বেয়ে , চোখে মুখে ঘর গেরস্থে সবুজালি আমেজ এনে দেয়। মনে হয় শুষ্ক পৃথিবী যেন ক্ষনিকেই সবুজ আংরাখা জড়িয়ে বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। দাপুটে শীত একেবারে যে চলে গেছে তা নয়, পাহাড়ের আনাচে কানাছে এখনো শীতের দাপট রয়েছে বেশ ভালোভাবেই। আবার কখনও আচমকা বৃষ্টির হাত ধরে সে রীতি মতন সকলকে কাঁপিয়েও দিচ্ছে।
Related Articles
সেরকমই এক শীত মাখা মেঘে ঢাকা এক শহরের সাথে পরিচয় করাবো। জুলুকের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে লিংথেমের এই গ্রাম। রংপুর শহর থেকে প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টার পথ। পাহাড়ের ঢালে গ্রামের পথে একদম শেষে রয়েছে একটি মায়াবী মনিস্ট্রি। সে মনিস্টিতে ঢোকার দুই পাশে সিঁড়ির ধারে রয়েছে গাঁদা ফুলের গাছ। দূর থেকে ভেসে আসবে কোন মৃদু স্বরের গান। হয়তো ইচ্ছা হবে নিজের মতন করে বেশ কিছুটা সময় কাটাতে। মনেও হতে পারে যে হয়তো বহু বছর পর প্রাণ খুলে শ্বাস নিলেন। এই অপরূপ মনোরম জায়গায় থাকার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি হোমস্টে। যেহেতু কম মানুষ এই জায়গার হদিশ পেয়েছে তাই খুব বেশি থাকার জায়গা নেই এই চত্বরে। তবে যে কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে তার প্রত্যেকটি ভীষণ মন কাড়বে।
চারদিকে রয়েছে নানা ধরনের ফুলের বাগান, এক ঝলকে দেখলে মনে হতে পারে হয়তো কোন রং প্যালেট এঁকে দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের খাঁজে। এই অচেনা গ্রামে যেতে হলে প্রথমে আপনাকে পৌঁছে যেতে হবে শিলিগুড়ি স্টেশন। সেখান থেকেই পেয়ে যাবেন রংপুর যাওয়ার গাড়ি। ৫০০ টাকায় ঘন্টা চারেকে দূরের এই গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন নিমেষে। তারপর সেখান থেকে একটু সময় কাটিয়ে রংলির জন্য গাড়িতে উঠে পড়ুন। সেখান থেকে প্রায় ৪০ মিনিট যাওয়ার পর পৌঁছাবেন আগামলোকে। সেখান থেকে পূর্ব সিকিমের অত্যন্ত পরিচিত সিল্ক রুটের পথে এগিয়ে গিয়ে পেয়ে যাবেন এবং বোরাথাঙ। এবং সেখানে নিরিবিলিতে কাটিয়ে দিতে পারেন পুরো একটি সপ্তাহ। চাইলে সমান সীমাটা বাড়াতেও পারেন আবার কমাতেও। তবে অজানা গ্রামে গিয়ে যে আনন্দটা উপভোগ করতে পারবেন তা হয়তো কোথাও গেলেই পাবেন না।