ঈদের ছুটিতে কাটোনো দিনগুলোকে ধরে রাখার কৃত্রিম চেষ্টা---- |
ভেবেছিলাম চারদেয়ালে ঘেরা যান্ত্রিক শহুরে জীবনের বিভিন্ন পেরেশানির কারণে এইবার হয়ত ঈদের ছুটিতে চিরচেনা গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হবেনা!কিন্তু প্রতিবছর গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপন করার অদম্য অভ্যাসটি এমনভাবে ছেপে ধরল যে আর পারলাম না।জুমাতুল বিদার নামাজ শেষ করে শেষ পর্যায়ের কেনাকাটা শেষ করে বাড়িতে যাব বলে মনস্থির করেছিলাম।কিন্তু ঈদ কাছে আসলেই এখানে মন ও শরীর দুটোই আর থাকতে চায় না।তাই অপ্রস্তুতির মধ্যেই কোনরকমে প্রস্তুত হয়ে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার বাধা উপেক্ষা করে দুইদিন আগেই রওনা দিলাম চিরচেনা পথের উদ্দেশ্যে।ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার সময়টুকু মনে হয় জীবনের আনন্দময় সময়গুলোর মধ্যে অন্যতম।না পাওয়ার বেদনায় ভারাক্রান্ত হৃদয় তখন সকল ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে এক নব উদ্দীপনায় জেগে ওঠে।ঈদের ছুটির ঝলমলে দিনগুলো কাটানোর পর শহরে ফিরে আসার সময় মন ও শরীর একেবারেই জরাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।সুখে থাকলে যে মানুষের যাপিত দিনগুলো খুবই তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায় তার প্রমান ঈদের ছুটিতে বাড়িতে কাটানো।শৈশব-কৈশোরের সেই অতি আপন চিরচেনা পথ-ঘাট,গাছ-পালা,রাজার পুকুর খ্যাত দিঘির পরিচ্ছন্ন জল,বিভিন্ন ধরনের পাখ-পাখালির অবিরাম ছুটাছুটি , চেনা-জানা পরিচিত মুখের সাথে পাঁচমিশালি আড্ডা ---এইভাবেই কেটে যায় দিনগুলো।ঈদের দিন মসজিদ থেকে আসার পর প্রতিবেশীদের বাড়িতে বাড়িতে যাওয়া হয় আর খাওয়া হয় হরেক রকমের খাবার।ছোট বেলায় এক প্রতিযোগিতায় আমরা নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো খুনসুটিতে লিপ্ত হতাম।সেটা হলো কাদের বাড়িতে সবচেয়ে মজার খাবার পরিবেশন করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে। ঈদের জন্য কেনা কোন জামা কাপড়ের সাথে যদি কোন বন্ধুর জামা কাপড়ের বিন্দুমাত্র সাদৃশ্য পাওয়া যেত তাহলে আর ঝগড়া থামায় কে!আহারে!ছোট বেলার ঈদের দিনগুলোর মত আনন্দ হয়ত আর পাবনা।তবুও এখন ঈদ কাটে ঈদের আনন্দে।ঈদের পরের দিন হয় আমাদের পরিবারে মহা আনন্দের ।বড় বোন ,ভগ্নিপতিরা(দুলাভাইরা) ও ভাগ্নে-ভাগ্নিরা আসে আমাদের বাড়িতে।খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডাবাজিতে কেটে যায় সারাদিন।সময়টাকে স্থির করে রাখার চেষ্টা করা করা ডিজিটাল ক্যামেরার মেমোরি সেলে।এইভাবেই ঘনিয়ে আসে আবার গ্রাম ছাড়ার দিনক্ষণ।ব্যথিত হৃদয়ে ফিরে আসতে হয় এক স্তব্ধ জীবনে।কোন সময় মনে হয় যদি জীবনের এই স্বল্পসময়টুকু গ্রামের গাছ-গাছালির নির্ভেজাল বাতাসের দোলায় সিক্ত হয়ে কাটিয়ে দিতে পারতাম তবেই তৃপ্ত হত এই অতৃপ্ত মানবহৃদয়।প্রতিবছর নতুন জামা কাপড় পড়ে খুশি মনে ঈদ কাটানোর তওফিক দান করার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে লাখো-কোটি শোকরিয়া জানাচ্ছি।যারা জীর্ণ-শীর্ণ পোশাক পড়ে ঈদের দিন বিভিন্ন পাড়ার বাড়িতে বাড়িতে সাহায্যের জন্য যায় তাদের জীবনেও ঈদ আসে!পরবর্তী বছরের ঈদ তাদের তাদের জন্য যেন সুখময় হয় সেই চেষ্টাই আমরা যেন করি তার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।আমীন----
আমাদের গ্রামের বাড়ির একাংশ---- |
Related Articles
This post first appeared on Private Coaching From Class Two To Class Five Within Minimum Cost By Ershad Sir., please read the originial post: here