পাগলা বাবা pdf - গজেন্দ্রকুমার মিত্র Pagla Baba pdf - Gajendra Kumar Mitra book pdf download link
মাথা তুললেন না-তবে তিনি যে আমাকে লক্ষ্য করেছেন তা একটু পরেই বোঝা গেল। তেমনি হেঁট হয়ে, কাটা পাথরের বড় টুকরো গুলোর গা থেকে হাতে করে মাটি সরিয়ে সেগুলোকে আলগা করার চেষ্টা করতে করতে, একসময় পরিষ্কার ‘কলকাতাই বাংলায় প্রশ্ন করলেন-“আপনিও বাঙ্গালী, না?
Related Articles
অস্বীকার করে লাভ নেই—আমি বেশ একটু থতমত খেয়ে গেলুম। আর যাই হোক, এখানে এ প্রশ্নর জন্য ঠিক প্রস্তুত ছিলুম না। সুতরাং খানিকটা
সময় লাগল—এই বিস্ময়ের চমকটা সামলে নিয়ে উত্তর দিতে।
ঢোক গিলে বললুম, হ্যা, মানে, আপনি-আপনারও কি বাঙালী শরীর?
সাধুদের পূর্বজীবনের কথা বলতে নেই, সন্ন্যাস গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে তাদের নবজন্ম শুরু নয়। তাই পূর্বাশ্রমে কোন দেশী ছিলেন প্রশ্ন করতে গেলে শরীরটা কোন দেশীয়—এই প্রশ্নই করতে হয়।
আমার কথা কইতে—অথবা কথা কইবার মতো স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেতে বলাই উচিত—যেটুকু সময় লেগেছে, তার মধ্যেই সাধুবাবা উঠে দাড়িয়েছেন। এবার আরও পরিষ্কার দেখলুম তাকে। রোদে-পোড়র ফলে ভেজা চেহারা—রঙ বা কান্তি বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই, মুখ ও চিবুক দাড়ি-গোঁফের অবগুণ্ঠনে ঢাকা—তবু মনে হল সন্ন্যাসীর বয়স বেশী নয়, চল্লিশ হবে বড়জোর এবং বয়সকালে, যখন জরার কোপে দাড়ি-গোঁফে হয়নি জবরজঙ্গিমা' তখন দেখতে সুশ্রীই ছিলেন।
আরও সেটা টের পাওয়া গেল সাধু যখন আমার প্রশ্নে হেসে উঠলেন, ঝকঝকে সুন্দর দাঁত বলে নয়, -হাসির ভঙ্গীটাও ভারী মিষ্টি, অনেকটা ছেলেমানুষের মতো। সমস্ত মুখটা যেন নিমেষে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল সে
হাসিতে।
বললেন, “না না, অত সমীহ করে শরীরটরীর বলতে হবে না, আমি বাঙ্গালীই। রীতিমতো সন্ন্যাস নেওয়া যাকে বলে তা আমি নিই নি।
কাজেই—কোন বাধা-নিষেধেই বাধা নেই আমি—এটা আমার একরকম ছদ্মবেশ বলতে পারেন, ভেক। ভেক না হ’ল ভিখ, মেলে না—জানেন তো?
‘ভিক্ষে তো আপনি নেন না শুনলুম, খেটেই খান। তবে আবার ভেবে কি দরকার?
তাও শোনা হয়ে গেছে এরই মধ্যে? ••ভক্তসংখ্যা দেখছি আমার অনেক।•••আরে মশাই খেটে খেতে চাইলেই কি খাওয়া যায় সব সময়?
এই যে বাবুরা কেউ ভিক্ষে চাইলেই বলেন, খেটে খেতে পারো না? খাটুনিটা দিচ্ছে কে সব সময়?—এই যে এদের মধ্যে কাজ করছি-অন্য কেউ এলে কি কাজ করতে দিত সরকারী লোকের সঙ্গে, না এত দয়াধর্ম করত। এ খাতির এই গেরুয়া কাপড়টার আর এই জটার।•••সে যাক গে, আপনি এখানে কি বেড়াতে এসেছেন। আজই এসে পড়েছেন, না আছেন ক'দিন, কাছাকাছি কোথাও আড্ডা গেড়েছেন?
‘না, প্রায় দিন দশেক আছি। আরও দিন দশ থাকব, এই রকম ইচ্ছে।
কোথায় আছেন? এদিকে তো থাকার মতো তেমন ..... কোনদিকে কার বাড়ি উঠেছেন?
বললাম, আমার এক বন্ধু এসেছেন সপরিবারে, তার এক বন্ধুর বাড়ি।
মাস দুয়েক থাকবেন তিনি। আমি এসেছি আমার বন্ধুর অতিথি হিসেবে।
কিষেণপুরের দুই আশ্রম ছাড়িয়ে দেরাদুনের দিকে যেতে এক ফালংটাক গেলে যে ছোট একটু গ্রামের মতো পড়ে ডানহাতি—সেইখানে দেখবেনপাশাপাশি দুটো পাকাবাড়ি উঠেছে—তারই এদিকেরটায় আছি।
‘বুঝেছি। ভার্মার বাড়ি। বুঝতে পেরেছি। আমিও ঐ কাছেই থাকি।•• জোয়ালাপ্রসাদ আহীর দুধ বেচে। আপনাদেরও বাড়িতে বোধ হয় ওই দুধ যোগায়—তারই আশ্রয়ে আছি আপাতত। রীতিমতো আশ্রয়ই। বাইরের দিকের দাওয়া ঘিরে দিয়েছে, একখানা চারপাই কম্বলও দিয়েছে, রীতিমতো সাধু প্রতিষ্ঠ। যাকে বলে। অন্য বিছানাও দিত—সাধুদের ফুলের বিছানায় শুতে নেই বলে সেটা এড়িয়ে গেছি। ভারী ভক্তিমান লোকটা। খেতে দিতেও তার আপত্তি নেই। নেহাৎ আমি ঘাড় পাতি নি তাই। সময় পেলে ভোরে উঠে ওর সঙ্গে হাত লাগিয়ে একটু-আধটু গরুর সেবা করে দিই, তাতেই ওর কুণ্ঠার সীমা নেই। আমি রাগ করে চলে যাব—এ ভয় না থাকলে ওটুকুও করতে দিত না। তাও, একটা না-একটা ছুতোয় প্রায়ই দুধ গিলিয়ে দেয় খানিকটা—ফাক পেলেই।•••ভারী মজা, যত বলি আমি সাধু নই...ততই দেখি সকলের ভক্তি বেড়ে যায়। সাধুগিরির বোধ হয় এই টই সিক্রেট অফ সাকসেস।
গজেন্দ্রকুমার মিত্র এর pdf book পাগলা বাবা pdf download করুন এখান থেকে। এছাড়াও সকল লেখকদের তালিকা একনজরে দেখুন এখানে। boierpathshala.blogspot.com বই পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরিই করার লক্ষ্যে নেটে পাওয়া কিছু pdf শেয়ার করে।
ডাউনলোড লিংকে কোন সমস্যা হলে বা ডাউনলোড লিংক ডেড হলে ফেসবুক পেজে (https://facebook.com/boierpathshala.official) মেসেজ করুন। লিংক আপডেট করে দেব।