Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

প্রেমের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ মানেই তো প্রেম আর প্রেমের কবিতা, আর প্রেমের কবিতা মানেই কিন্তু রবি ঠাকুর অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা সবার আগেই আমাদের মনে পরে। ভাবছেন প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে নতুন করে আবার কী জানবেন,সবই তো সবার জানা! ধারণাটা কিন্তু একেবারেই ভুল। প্রেম সম্পর্কে বেশির ভাগ তথ্যই এখনো অজানা। প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। প্রেমের অনুভূতি গুলো কেমন, কেনই বা মানুষ ভালোবাসে, প্রেমে পড়ার সময় মানুষ কী দেখে ইত্যাদি নানা রকমের প্রশ্ন জাগে অনেকের মনেই। ভালোবাসা নিয়ে মানুষের এই আগ্রহ চিরন্তন একটি বিষয়। চিরচেনা ভালোবাসার এই অনুভূতি সম্পর্কে অনেক কিছুই আমাদের জানা। আবার এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো আমরা আজও জানি না। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার ছোয়া মানেই প্রেম প্রেম ব্যাপারটা কিছু থেকেই যায়। অনেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রেমিক কবিও বলতেন। আসুন আমরা সরাসরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কিছু প্রেমের কবিতা জেনে নি।

আমাদের জীবনের প্রেক্ষাপটে রোজ আমরা পাই  জীবনের রূপরেখা, এবং তাকেই তুলির টানে রাঙিয়ে চলায় আমাদের জীবনের স্বার্থকতা।  এবং এই তুলির রঙের রসদই আমরা পাই কবিগুরুর লেখা থেকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান এই সব আমাদের ভাবায়, জীবন টাকে নতুন রঙে-রূপে চিনতে শেখায়। এমনি কিছু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি আমরা এখানে দিলাম যা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর রচনা থেকে নেওয়া।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেমের কবিতা – রবি ঠাকুরের প্রেমের কবিতা

1. অমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে

অমন আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে
চলবে না।
এবার হৃদয় মাঝে লুকিয়ে বোসো,
কেউ জানবে না, কেউ বলবে না।
বিশ্বে তোমার লুকোচুরি,
দেশ বিদেশে কতই ঘুরি –
এবার বলো আমার মনের কোণে
দেবে ধরা, ছলবে না।
আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে
চলবে না।
জানি আমার কঠিন হৃদয়
চরণ রাখার যোগ্য সে নয় –
সখা, তোমার হাওয়া লাগলে হিয়ায়
তবু কি প্রাণ গলবে না।না হয় আমার নাই সাধনা,
ঝরলে তোমার কৃপার কণা
তখন নিমেষে কি ফুটবে না ফুল
চকিতে ফল ফলবে না।
আড়াল দিয়ে লুকিয়ে গেলে
চলবে না।
2. আমার মাঝে তোমার লীলা হবে
আমার মাঝে তোমার লীলা হবে,

তাই তো আমি এসেছি এই ভবে।
এই ঘরে সব খুলে যাবে দ্বার,
ঘুচে যাবে সকল অহংকার,
আনন্দময় তোমার এ সংসার

আমার কিছু আর বাকি না রবে।

মরে গিয়ে বাঁচব আমি, তবে
আমার মাঝে তোমার লীলা হবে।
সব বাসনা যাবে আমার থেমে
মিলে গিয়ে তোমারি এক প্রেমে,
দুঃখসুখের বিচিত্র জীবনে
তুমি ছাড়া আর কিছু না রবে।

3. যাবার দিন

যাবার দিনে এই কথাটি বলে যেন যাই –
যা দেখেছি, যা পেয়েছি, তুলনা তার নাই।
এই জ্যোতিসমুদ্র মাঝে     যে শতদল পদ্ম রাজে
তারি মধু পান করেছি, ধন্য আমি তাই।
যাবার দিনে এই কথাটি জানিয়ে যেন যাই।।

বিশ্বরূপের খেলাঘরে কতই গেলেম খেলে,
অপরূপকে দেখে গেলেম দুটি নয়ন মেলে।
পরশ যাঁরে যায় না করা     সকল দেহে দিলেন ধরা,
এইখানে শেষ করেন যদি শেষ করে দিন তাই –
যাবার বেলা এই কথাটি জানিয়ে যেন যাই।।

4. আছে আমার হৃদয় আছে ভরে

আছে আমার হৃদয় আছে ভরে,
এখন তুমি যা খুশি তাই করো।
এমনি যদি বিরাজ’ অন্তরে
বাহির হতে সকলই মোর হরো।
সব পিপাসার যেথায় অবসান
সেথায় যদি পূর্ণ করো প্রাণ,
তাহার পরে মরুপথের মাঝে
উঠে রৌদ্র উঠুক খরতর।

এই যে খেলা খেলছ কত ছলে
এই খেলা তো আমি ভালবাসি।
এক দিকেতে ভাসাও আঁখিজলে,
আরেক দিকে জাগিয়ে তোল’ হাসি।
যখন ভাবি সব খোয়ালাম বুঝি
গভীর করে পাই তাহারে খুঁজি,
কোলের থেকে যখন ফেল’ দূরে
বুকের মাঝে আবার তুলে ধর’।

 5. ক্ষণিকা

খোলো খোলো, হে আকাশ, স্তব্ধ তব নীল যবনিকা –
খুঁজে নিতে দাও সেই আনন্দের হারানো কণিকা।
কবে সে যে এসেছিল আমার হৃদয়ে যুগান্তরে
গোধূলিবেলার পান্থ জনশূন্য এ মোর প্রান্তরে
লয়ে তার ভীরু দীপশিখা!
দিগন্তের কোন্ পারে চলে গেল আমার ক্ষণিকা।।

6. নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে

নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে
রয়েছ নয়নে নয়নে,
হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে
হৃদয়ে রয়েছ গোপনে।

বাসনা বসে মন অবিরত,
ধায় দশ দিশে পাগলের মতো।
স্থির আঁখি তুমি ক্ষরণে শতত
জাগিছ শয়নে স্বপনে।

সবাই ছেড়েছে নাই যার কেহ
তুমি আছ তার আছে তব কেহ
নিরাশ্রয় জন পথ যার যেও
সেও আছে তব ভবনে।

তুমি ছাড়া কেহ সাথি নাই আর
সমুখে অনন্ত জীবন বিস্তার,
কাল পারাপার করিতেছ পার
কেহ নাহি জানে কেমনে।

7. প্রেম ও প্রকৃতি

মন হতে প্রেম যেতেছে শুকায়ে, জীবন হতেছে শেষ।
শিথিল কপোল, মলিন নয়ন, তুষারধবল কেশ।
পাশেতে আমার নীরবে পড়িয়া অযতনে বীণাখানি
বাজাবার বল নাহিক এ হাতে, জড়িমাজড়িত বাণী।
গীতিময়ী মোর সহচরী বীণা, হইল বিদায় নিতে।
আর কি পারিবি ঢালিবারে তুই অমৃত আমার চিতে।
তবু একবার, আর-একবার, ত্যজিবার আগে প্রাণ
মরিতে মরিতে গাইয়া লইব সাধের সে-সব গান।
দুলিবে আমার সমাধি-উপরে তরুগণ শাখা তুলি
বনদেবতারা গাহিবে তখন মরণের গানগুলি॥

8. প্রেমের দূতকে পাঠাবে নাথ কবে

প্রেমের দূতকে পাঠাবে নাথ কবে।

সকল দ্বন্দ্ব ঘুচবে আমার তবে।

আর-যাহারা আসে আমার ঘরে

ভয় দেখায়ে তারা শাসন করে,

দুরন্ত মন দুয়ার দিয়ে থাকে,

 হার মানে না, ফিরায়ে দেয় সবে।

সে এলে সব আগল যাবে ছুটে,

সে এলে সব বাঁধন যাবে টুটে,

ঘরে তখন রাখবে কে আর ধরে

 তার ডাকে যে সাড়া দিতেই হবে।

আসে যখন, একলা আসে চলে,

গলায় তাহার ফুলের মালা দোলে,

সেই মালাতে বাঁধবে যখন টেনে

 হৃদয় আমার নেরব হয়ে রবে।

9. মানসী

শুধু বিধাতার সৃষ্টি নহ তুমি নারী!
পুরুষ গড়েছে তোরে সৌন্দর্য সঞ্চারি
আপন অন্তর হতে। বসি কবিগণ
সোনার উপমাসূত্রে বুনিছে বসন।
সঁপিয়া তোমার ‘পরে নূতন মহিমা
অমর করেছে শিল্পী তোমার প্রতিমা।
কত বর্ণ, কত গন্ধ, ভূষণ কত-না –
সিন্ধু হতে মুক্তা আসে, খনি হতে সোনা,
বসন্তের বন হতে আসে পুষ্পভার,
চরণ রাঙাতে কীট দেয় প্রাণ তার।
লজ্জা দিয়ে, সজ্জা দিয়ে, দিয়ে আবরণ,
তোমারে দুর্লভ করি করেছে গোপন।
পড়েছে তমার ‘পরে প্রদীপ্ত বাসনা –
অর্ধেক মানবী তুমি, অর্ধেক কল্পনা।।

10. অনন্ত প্রেম 

তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি
শত রূপে শত বার
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার।
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয়
গাঁথিয়াছে গীতহার,
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়,
নিয়েছ সে উপহার
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার।


যত শুনি সেই অতীত কাহিনী,
প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
অতি পুরাতন বিরহমিলনকথা,
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে
দেখা দেয় অবশেষে
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া
তোমারি মুরতি এসে,
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।

The post প্রেমের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর appeared first on Chalo Kolkata.



This post first appeared on Chalo Kolkata, please read the originial post: here

Share the post

প্রেমের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

×

Subscribe to Chalo Kolkata

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×