Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

নেতাজীর জীবনী | Netaji Subhash Chandra Bose Biography In Bengali

নেতাজীর জীবনী
Netaji Subhash Chandra Bose Biography


নাম

সুভাষচন্দ্র বসু/Netaji Subhash Chandra Bose

জন্ম

২৩শে জানুয়ারী,১৮৯৭ (কটক, ওড়িশা)

অভিভাবক

জানকীনাথ বসু (বাবা)
প্রভাবতী দেবী (মা)

দাম্পত্য সঙ্গী

এমিলি শেঙ্কল

সন্তান

অনিতা বসু পাফ

শিক্ষা

১৯০৯ সালে রাভেনশো কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯১৩ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়েন আর তারপর ১৯১৮ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শন নিয়ে পড়েন

পেশা

রাজনীতিবিদ ও স্বাধীনতা সংগ্রামী

সংগঠন

আজাদ হিন্দ ফৌজ
ফরওয়ার্ড ব্লক

জাতীয়তা

ভারতীয়

ধর্ম

হিন্দু

উপাধি

নেতাজী, দেশনায়ক

মৃত্যু

১৮ই আগস্ট ১৯৪৫ (বিতর্কিত)

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক ছিলেন সমগ্র বাংলা তথা বাঙালীর গর্ব, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু | ভারতের স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদান আমাদের কারোরই ভোলার নয় | তিনি দেশের জন্য যা করে গেছেন, তা হয়তো অনেক রাজনৈতিক নেতারাও করেননি জীবনে |

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম হয় ১৮৯৭ সালের ২৩শে জানুয়ারী, বর্তমান ওড়িশার কটক শহরে | তাঁর বাবার নাম ছিলো শ্রী জানকীনাথ বসু, যিনি কিনা সেইসময়ের কটক শহরের একজন বিখ্যাত আইনজীবী ছিলেন এবং মা ছিলেন শ্রীমতী প্রভাবতী দেবী |

তুমি কি জানো, তিনি কিন্তু ছিলেন তাঁর বাবা মায়ের চোদ্দ সন্তানের মধ্যে নবমতম সন্তান | তাঁর মেজদা ছিলেন শরৎচন্দ্র বসু, যিনি তাঁকে খুব ভালোবাসতেন এবং ছোট্ট নেতাজীরও খুব কাছের মানুষ ছিলেন তিনি |

নেতাজীর মধ্যে এই দেশপ্রেম ব্যাপারটা জাগে তাঁর বাবার হাত ধরেই | যদিও তাঁর বাবা একজন ব্রিটিশ শাসিত সরকারী অফিসে কর্মরত ছিলেন, তবুও তিনি তৎকালীন কংগ্রেসের সমস্ত অধিবেশনে যোগদান করতেন এবং সাধারণ মানুষের খুব সেবা করতেন | তিনি স্বদেশী এবং জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পক্ষপাতী ছিলেন |

Subhash Chandra Bose Education:

ছোটবেলা থেকেই সুভাষচন্দ্র, পড়াশোনার বিষয়ে ভীষন মনোযোগী ছিলেন, আর তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় কটকের এক প্রোটেস্ট্যান্ড ইউরোপীয় স্কুল থেকে | এরপর ১৯০৯ সালে তিনি সেখান থেকে ভর্তি হন কটকের রাভেনশো কলেজিয়েট স্কুলে |

স্কুলে পড়ার সময়, তিনি সেই স্কুলের প্রিন্সিপাল বেনিমধাব দাসের ব্যক্তিত্বের উপর বিশেষভাবে প্রভাবিত হন এবং তাঁরই সহযোগীতায় ছোট্ট সুভাষ, স্বামী বিবেকানন্দের বই পড়তে আগ্রহী হয়েও পরেন |

সুভাষচন্দ্র বোস অবশ্য পরবর্তীকালে তাঁর লেখায় এটা উল্লেখ করেছিলেন যে, স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও লেখা বই তাঁকে একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীতে পরিণত করেছিলো | স্বামীজির লেখা বই পড়েই তিনি তাঁর জীবনের আসল উদ্দেশ্য খুঁজে পান |

জার্মান সেনার সাথে নেতাজী

সাল ১৯১১, যখন নেতাজী ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কলকাতায় প্রথমস্থান অধিকার করেন । এরপর তিনি ১৯১১ সালে ভর্তি হন কোলকাতার প্রেসিডেন্সিতে, কিন্তু সেখানে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে ভারত বিরোধী মত পার্থক্যর জন্য ভীষন সংঘাত শুরু হয় |

সেই সংঘাতে, যেহেতু সুভাষচন্দ্র ভারতীয় ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন তাই তাঁকে এক বছরের জন্য কলেজ থেকে বহিস্কার করে দেওয়া হয় এবং পরীক্ষা দেওয়ারও অনুমতি দেওয়া হয়না |

তারপর ১৯১৮ সালে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে, দর্শনে সাম্মানিক সহ বি.এ পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি |

কোলকাতায় পড়াশোনা শেষ করে সুভাষচন্দ্র বসু, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ফিজউইলিয়াম কলেজে উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হন । সেখানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করে তিনি প্রায় নিয়োগপত্র পেয়ে যান, কিন্তু বিপ্লব সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি হওয়ার জন্য সেই নিয়োগও প্রত্যাখ্যান করেন |

নেতাজীর জীবনী নিয়ে তৈরী একটি সম্পূর্ণ এনিমেটেড সিনেমা:

Subhash Chandra Bose Political Career:

চাকরি প্রত্যাখ্যান করার পর তিনি আবার ইংল্যান্ড ছেড়ে ভারতে চলে আসেন এবং এখানে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন | সেই দলে ঢোকার তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো, ভারতকে যেভাবেই হোক ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীন করে তোলা |

১৩ই এপ্রিল ১৯১৯, যখন অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড ও দমনমূলক রাওলাট আইন সমস্ত ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে । এইরুপ বিশৃঙ্খলার পর, নেতাজী ‘স্বরাজ’  নামক একটি খবরের কাগজের হয়ে লেখালেখি শুরু করেন এবং বঙ্গীয় প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রচারের দায়িত্বে নিযুক্ত হন |

এরপর চিত্তরঞ্জন দাশ ১৯২৪ সালে যখন কলকাতা পৌরসংস্থার মেয়র হন, সেইসময় সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর অধীনে কাজ করতেন । চিত্তরঞ্জন দাশই ছিলেন তাঁর রাজনৈতিক গুরু, কারণ তাঁর কাছ থেকেই সুভাষচন্দ্রের রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় |

তার ঠিক পরের বছর অর্থ্যাৎ ১৯২৫ সালে অন্যান্য জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে তাঁকেও বন্দি করা হয় এবং মান্দালয়ে নির্বাসিত করা হয় । সেখানে থাকাকালীন তিনি যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তও হয়েছিলেন | জানা যায়, তিনি তাঁর ২০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে, প্রায় ১১ বার গ্রেফতার হন ব্রিটিশদের হাতে |

সুভাষচন্দ্র বোসের হৃদয় জাতীয়তাবাদের ধারায় ভরা ছিল, তাই স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য তাঁর ভীতর জাতীয়তাবাদী মনোভাব, ব্রিটিশদের কাছে খুব ভালো খবর ছিলোনা | তাই তাঁরা প্রত্যেকে সুভাষচন্দ্রের প্রতি সর্বদা সতর্ক থাকতেন |

সাল ১৯৩০, যখন সুভাষকে সমগ্র ইউরোপ থেকে নির্বাসিত করা হয়, কিন্তু তবুও তিনি বাকি অন্যান্য দেশে থেকে নিজের দেশকে স্বাধীন করার কাজে তখনও লিপ্ত থাকেন | পরে, তিনি একবার নিজের দেশেও ফিরেছিলেন শুধুমাত্র তাঁর বাবার অন্ত্যোষ্টি ক্রিয়া করার জন্য | তারপর আবার তিনি আত্মগোপন করেন |

আরো পড়ুন: এ.পি.জে আব্দুল কালামের জীবনী

তারপর ১৯৩৮ সালে তিনি ভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন আর ১৯৩৯ সালে তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য ত্রিপুরা অধিবেশনে কংগ্রেসের সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন ।

সুভাষচন্দ্র বসু এই নির্বাচনে জয়লাভ করলেও গান্ধীজির বিরোধিতার ফলস্বরূপ তাকে বলা হয় পদত্যাগ পত্র পেশ করতে;  নাহলে কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য পদত্যাগ করবে । এইসব নানা কারণে তিনি অবশেষে নিজেই কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেণ এবং “ফরওয়ার্ড ব্লক” নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন ।

কিন্তু সেইসময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় আর সেই যুদ্ধে ভারতীয় সেনারা ব্রিটিশদের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেয় | ভারতবর্ষের এইভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার ব্যাপারে সুভাষচন্দ্র বসু ভীষনভাবে ব্যথিত হন | তিনি সেই সময় গৃহবন্দি ছিলেন কিন্তু মনে মনে তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন দেশত্যাগ করার |

অবশেষে তাঁর দলের একজন সদস্যকে নিয়ে তিনি, আফগানিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে জার্মানি পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেন | সেখানে গিয়ে তিনি প্রথমে বার্লিনে “ভারতীয় মুক্ত কেন্দ্র” গড়ে তোলেন, আর তারপর ভারতের স্বাধীনতার জন্য তিনি জার্মান নেতা এডলফ হিটলারের সাহায্য চান |

কিন্তু ভারতের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সাহায্যের ব্যাপারে এডলফ হিটলারের কোনো ইচ্ছা না থাকায়, তিনি তা বুঝতে পেরে খুব দুঃখ পান | এরপর ১৯৪৩ সালে তিনি অবশেষে জার্মানি ত্যাগ করেন এবং একটি সাবমেরিনে চেপে পোঁছে যান জাপানে, হিদেকি তোজোর সাহায্যের আশায় |

সেইসময় জাপানে রাসবিহারি বসু গড়ে তুলেছিলেন ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনী | ১৯৪৩ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে তিনি সেই বাহিনীর দায়িত্ব তুলে দেন | নারী-পুরুষ মিলিয়ে এই বাহিনীতে মোট সৈন্য সংখ্যা ছিলো প্রায় ৮৫০০০ মতো | পরে অবশ্য এই বাহিনীর নাম বদলে “আজাদ হিন্দ” করে দেওয়া হয় |

নেতাজী ও তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনী

সুভাষ চন্দ্র বসু আশা করেছিলেন, ব্রিটিশদের উপর তাঁর সৈন্যবাহিনীর হামলার খবর শুনে বিপুল সংখ্যক সৈন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী থেকে হতাশ হয়ে সেখানে যোগ দেবে কিন্তু তা একদমই হয়নি | কারণ খুব সংখ্যক ভারতীয় সেনা সেই হামলার পর তাঁর বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলো |

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে যখন জাপান আত্মসমর্পণ করে আমেরিকার কাছে, তখন সেইসাথে তাঁর জাতীয় সেনাবাহিনীও আত্মসমর্পণ করে নেয় |

Death Of Subhash Chandra Bose:

জাপানের এই ঘোরতর দূর্দশার পর নেতাজী, ১৮ই আগস্ট ১৯৪৫ সালে জাপানের তাইহুকু বিমানবন্দর থেকে প্লেনে করে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পরেন এবং সেইসাথে মারা যান | যদিও তাঁর এই মৃত্যুর সত্যতা সম্পর্কে আজও মানুষ অজানা | কেউ ঠিক ভাবে জানেন না যে, সেই দিনটির পর নেতাজীর কি হলো |

অনেক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ঘটনা একদম ভুয়ো | নেতাজীর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে উঁচুতলার কিছু ভারতীয় নেতারা এবং ইংরেজ সরকার মিলিতভাবে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে হত্যা করেন নৃশংস ভাবে |

আরো পড়ুন: সৌরভ গাঙ্গুলীর সফলতার কাহিনী

যদিও এই তথ্যের পিছনে কতটা সত্যতা আছে, তাও আমাদের কাছে এক রহস্যের সমান | কিন্তু নেতাজী যা করে গেছেন আমাদের ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য, তা আমরা কখনই ভুলতে পারবোনা | তাঁর অবদান প্রত্যেকটা ভারতবাসী চিরকাল মনে রাখবে | তিনি সর্বদা আমাদের মধ্যে অমর হয়ে আছেন এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছেও অমর হয়েই থাকবেন |


আশা করি তুমি Netaji Subhash Chandra Bose Biography in Bengali”  পড়ে নিশ্চই অনেক কিছু সুন্দর তথ্য সম্পর্কে জানতে পেরেছো | পোস্টটা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই একটু Comment করে তোমার মতামত আমায় জানিও | তোমার মূল্যবান মতামত আমাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাতে  ভীষনভাবে সাহায্য করে |

The post নেতাজীর জীবনী | Netaji Subhash Chandra Bose Biography In Bengali appeared first on Ajob Rahasya.

Share the post

নেতাজীর জীবনী | Netaji Subhash Chandra Bose Biography In Bengali

×

Subscribe to মস্তিষ্কের অবচেতন ভাগের ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় |how To Unlock Subconscious Mind Power In Bangla

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×