পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে রোগীকে ধর্ষণ এবং শারীরিক মেলামেশার ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকির অভিযোগে ডা. এ এইচ খান বিজয় নামের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার আদালতে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত বিজয় একজন এমবিবিএস ডাক্তার। তিনি সরকারি চাকরি না করে কুষ্টিয়া শহরের সিটি মেডিকেল সার্ভিসেস অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখেন।
Related Articles
রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিরপুর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ওই নারী রোগী। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এনামুল হক মামলাটি আমলে নিয়ে এ বিষয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। আদালতে দাখিল করা এজাহারে চিকিৎসকের সঙ্গে ওই নারীর চারটি শারীরিক সম্পর্কের ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মিরপুর উপজেলার ধোবল গ্রামের একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন ওই নারী। ২০১৭ সালের ৯ মার্চ হার্টের সমস্যায় শহরের পিয়ারাতলায় সিটি মেডিকেল সার্ভিসেস অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তার দেখাতে যান। ওই ক্লিনিকের ডাক্তার এ এইচ খান বিজয় তার সকল সমস্যার কথা শুনে কয়েক দিনের ওষুধ লিখে প্রেসক্রিপসন করে দেন এবং তিনদিন পর আবার আসতে বলেন।
চিকিৎসকের কথা মতো ১৫ মার্চ ওই নারী আবার বিজয়ের চেম্বারে আসলে তিনি কয়েকটি পরীক্ষা করতে বলেন। পরীক্ষার কথা বলে তাকে শহরের একটি বাড়িতে নিয়ে যান ওই চিকিৎসকের পরিচিত এক ব্যক্তি। সেখানে গিয়ে কোনো মেশিন দেখতে না পেয়ে তার সন্দেহ হয়। ওই লোককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাক্তার চলে আসবেন।
প্রায় এক ঘণ্টা পর ডাক্তার এ এইচ খান বিজয় ওই বাড়িতে এসে পরীক্ষার নাম করে তাকে ধর্ষণ করেন। পরে কাজী ডেকে এনে ওই নারীকে বিয়ে করেন ডাক্তার এ এইচ খান বিজয়। এরপর থেকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে দিনের পর দিন ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক মেলামেশা করে আসছেন ডাক্তার বিজয়। শারীরিক মেলামেশার অনেকগুলি ভিডিও গোপনে ধারণ করে রাখেন তিনি। পরবর্তীতে ওই নারী বিয়ের কাগজ চাইলে দুইজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিয়ের কাগজ না দিয়ে বিজয় বলেন, শারীরিক মেলামেশার জন্য বিয়ের মিথ্যা মহড়া করেছি।
ওই নারী দাবি করেন, মেলামেশা না করলে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিতে থাকেন বিজয়। এক পর্যায়ে তিনি কৌশলে বিজয়ের মোবাইল থেকে মেমোরি কার্ড বের করে পালিয়ে আসেন এবং কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি আদালত তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, মামলাটি দায়েরের পর থেকে বিজয় তাকে মোবাইল ফোনে মামলা তুলে নেয়ার জন্য অব্যাহতভাবে হুমকি প্রদান করে যাচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
বাদীর আইনজীবী মখলেছুর রহমান বলেন, আমার মক্কেলকে ধর্ষণ এবং বিয়ের নামে প্রতারণা করে শারীরিক মেলামেশার ভিডিওচিত্র গোপনে ধারণ করেন ডা. এএইচ খান বিজয়। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিরপুর আদালতে পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
জাগো নিউজ
The post পরীক্ষার নামে রোগীকে ধর্ষণ, ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়ার হুমকি appeared first on Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস.