Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

পরাজয় নিয়ে কাদেরকে দুষলেন মাশরাফি?

Tags: agravebrvbar

র্দান্ত শুরুর পর বাজেভাবে শেষ করা টুর্নামেন্ট শেষে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা বলেন, ২২২ রান চেজ করার সুযোগ নেয়া দরকার ছিল আমাদের। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সাকিবকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।

তাঁর মতে এই পরাজয়ের জন্য সেটা কোনো অজুহাত নয়। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ভালো ব্যাট করেছে। আমরা ভেবেছিলাম, ২২০-২৩০ ঠিক আছে। আমাদের আরো ভালো ব্যাট করা উচিত ছিল। কিন্তু পার্টনারশিপ হয়নি। ফ্যানরা সবসময় আমাদের সাথে ছিল, আমাদের সব পরিস্থিতিতেই সমর্থন দিয়ে গেছে। আমরা করি তারা আমাদের সাথেই থাকবে।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বাংলাদেশকে ৭৯ রানের ব্যবধানে হারায় লংকানরা। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২১ রানে অলআউট হয় লংকানরা। জবাবে পেসার শেহান মাদুশানকার হ্যাটট্রিকে ৪১ দশমিক ১ ওভারে মাত্র ১৪২ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

লিগ পর্বের চার ম্যাচেই টস ভাগ্যে জিতেছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। কিন্তু ফাইনালে শ্রীলংকার বিপক্ষে টস লড়াইয়ে জিততে পারেননি ম্যাশ। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন শ্রীলংকার অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল।

দলে তিনটি পরিবর্তন এনে ফাইনাল শুরু করে বাংলাদেশ। লিগ পর্বের শেষ ওয়ানডেতে শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলা ওপেনার এনামুল হক বিজয়, দুই অলরাউন্ডার নাসির হোসেন ও আবুল হাসান শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে সুযোগ পাননি। তাদের পরিবর্তে ফাইনালে সুযোগ পান মোহাম্মদ মিথুন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।

বল হাতে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করেন মিরাজ। তার প্রথম ডেলিভারিতেই বাউন্ডারি মারেন শ্রীলংকার ওপেনার দানুস্কা গুনাথিলাকা। অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। মিরাজের বলেই আউট হন গুনাথিলাকা। ১১ বলে ৬ রান করে ফিরেন তিনি।

দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর শ্রীলংকার হাল ধরেন আরেক ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও কুশল মন্ডিস। উইকেট সেট না হয়েই মারমুখী রুপ নেন মেন্ডিস। মিরাজের তৃতীয় ওভারে প্রথম চার ডেলিভারিতে ৬, ৪, ৬, ৬ রান তুলে নেন মেন্ডিস। তার এমন মারমুখী ব্যাটিং বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিলো না। পরের ওভারেই বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফির বলে আউট হন মেন্ডিস। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় মাত্র ৯ বলে ২৮ রান করেন মেন্ডিস।

দলীয় ৪২ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর শ্রীলংকাকে বড় জুটি এনে দেন থারাঙ্গা ও উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকবেলা। এ জন্য বেশ সর্তক ছিলেন তারা। উইকেট ধরে রাখাতেই মনোযোগ ছিলেন শ্রীলংকার দুই ব্যাটসম্যান। এ জুটির কল্যাণেই ২২তম ওভারের প্রথম বলে শ্রীলংকার স্কোর শতরানে পৌছায়।

তিন অংকে পৌঁছানের কিছুক্ষণ পরই তৃতীয় উইকেট হারাতে হয় শ্রীলংকাকে। বল হাতে আক্রমণে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে এই জুটিকে বিচ্ছিন্ন করেন সাইফউদ্দিন। ৪টি চারে ৫৭ বলে ৪২ রান করে থামেন ডিকবেলা। তৃতীয় উইকেটে ১০৭ বলে ৭১ রান যোগ করেন থারাঙ্গা ও ডিকবেলা।

ডিকেবলা যখন ফিরে যান তখন ৩৬ রানে অপরাজিত থারাঙ্গা। এ সময় ক্রিজে থারাঙ্গার সঙ্গী হন অধিনায়ক চান্ডিমাল। দলপতিকে নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৭তম ও বাংলাদেশের বিপক্ষে পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন থারাঙ্গা। এ জন্য ৮৭টি বল মোকাবেলা করেন থারাঙ্গা। এর মধ্যে ব্যক্তিগত ৩৯ রানে জীবনও পান তিনি।

হাফ-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংস বড় করার চেষ্টাতেই ছিলেন থারাঙ্গা। কিন্তু ৩৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুরের বলে লেগ বিফোর ফাঁদে পড়েন থারাঙ্গা। আম্পায়ারের সিদ্বান্তে আউট হন থারাঙ্গা। কিন্তু রিভিউ নিয়ে এ যাত্রায় বেঁচে যান তিনি। বেঁচে গিয়েও লাভ হয়নি থারাঙ্গার। পরের ডেলিভারিতেই ফিজের বলে বোল্ড হন থারাঙ্গা। ৯৯ বল মেকাবেলায় ৫টি বাউন্ডারিতে ৫৬ রান করেন দলটির সাবেক এ অধিনায়ক। থারাঙ্গাকে শিকারের মাধ্যমে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের ২৭তম ম্যাচে ৫০তম উইকেট পূর্ণ করেন মুস্তাফিজ।

থারাঙ্গাকে ফিরিয়ে দেয়ার পর শ্রীলংকার মেরুদন্ডে জোড়া আঘাত হানেন বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসেন। মারমুখী ব্যাটসম্যান থিসারা পেরেরা ও আসেল গুনারতেœকে নিজের শিকার বানিয়ে শ্রীলংকার বড় স্কোরের পথ বন্ধ করে দেন রুবেল। পেরেরা ২ ও গুনারতেœ ৬ রান করেন।

দলের শেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটসম্যান ফিরে গেলেও শ্রীলংকার ভরসা হিসেবে তখন টিকে ছিলেন চান্ডিমাল। একপ্রান্ত আগলে ধরে রেখেছিলেন তিনি। তার দিকেই তাকিয়েছিলো লংকানরা। দলের স্কোর শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে যেতে পারেন চান্ডিমাল তা দেখার অপেক্ষায় ছিলো দল।

কিন্তু শ্রীলংকার বড় ইনিংস গড়ার স্বপ্নে পানি ঢেলে দেন বাংলাদেশের রুবেল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পেরেরা ও গুনারতœকে তুলে নেয়া রুবেল, এবার ফিরিয়ে দেন চান্ডিমালকেও। ৩৩তম ওভারের শেষ বলে সাকিব আল হাসানকে ছক্কা হাকাঁনোটিই ছিলো চান্ডিমালের ৭৪ বলের ইনিংসে একটি বড় শট। তাই ওই ১টি ওভার বাউন্ডারিতে ৪৫ রান করেন চান্ডিমাল।

চান্ডিমাল যখন ফিরেন তখন ইনিংসের ১৫ বল বাকী ছিলো। শেষ ১৫ ডেলিভারিতে শ্রীলংকার বাকী ৩ উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ ও রুবেল। আকিলা ধনানঞ্জয়াকে ১৭ রানে ফিজ ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা শেহান মাদুশাঙ্কাকে ৭ রানে শিকার করেন রুবেল। ইনিংসের শেষ বলে দলীয় ২২১ রানে রান আউটের মাধ্যমে নিজেদের শেষ উইকেট হারায় শ্রীলংকা। বাংলাদেশের পক্ষে রুবেল ৪৬ রানে ৪টি এবং মুস্তাফিজ ২৯ রানে ২টি উইকেট নেন। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট শিকার করেন মিরাজ, মাশরাফি ও সাইফউদ্দিন।

এ ম্যাচে বল হাতে মাত্র ৫ ওভার বোলিং করেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। দুভার্গ্যের শিকার হয়ে ৪২তম ওভারের প্রথম ডেলিভারি শেষে মাঠ ত্যাগ করেন সাকিব। ইনিংসের ৪১তম ওভারে প্রথম ডেলিভারিতে এক্সট্রা কভারে ফিল্ডিং করতে গিয়ে বাঁ-হাতে আঙ্গুলে ব্যাথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন সাকিব।

জয়ের জন্য ২২২ রানে লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই সর্তক বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মিথুন। উইকেটে সেট হবার চেষ্টায় ছিলেন তারা। কিন্তু এই জুটিকে সেটি করতে দেননি শ্রীলংকার পেসার চামিরা। টুর্নামেন্টের প্রথম তিন ম্যাচেই হাফ-সেঞ্চুরি করা তামিমকে ৩ রানে ফিরিয়ে দেন চামিরা।

তামিমের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মিথুনও। সাব্বিরের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন তিনি। ১টি ছক্কায় ২৭ বলে ১০ রান করেন সাড়ে তিন বছর পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া মিথুন।

সাকিবের ইনজুরিতে তিন নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিলেন সাব্বির রহমান। সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। তামিমকে শিকার করা চামিরা এবার ফিরিয়ে দেন সাব্বিরকেও। তার ব্যাট থেকে আসে ২ রান।

২২ রানে উপরের সারির ৩ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। নিজেদের পরিকল্পনায় সফলও হন তারা। তাই সময় গড়ানোর সাথে সাথে বাড়তে থাকে দলের স্কোর। এই জুটিতেই দলীয় স্কোর শতক পেরিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখছিলো। কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ শিবিরে আঘাত হানের শ্রীলংকার লেগ স্পিনার আকিলা ধনঞ্জয়া।

২২ রানে থাকা মুশফিককে শিকার করেন ধনানঞ্জয়া। অবশ্য ব্যক্তিগত ২০ রানে এই ধনানঞ্জয়ার ডেলিভারিতেই আম্পায়ারের সিদ্বান্তে আউট হয়েছিলেন মুশি। পরে রিভিউ নিয়ে বেঁেচ যান মুশফিকুর। কিন্তু জীবন পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।

মুশফিককে শিকারের পর মিরাজের উইকেটও নিজের ঝুলিতে ভরেন ধনানঞ্জয়া। ৫ রান করেন তিনি। এতে ৯০ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। সেখান থেকে লড়াইয়ের আভাস দেন মাহমুদুল্লাহ ও সাইফউদ্দিন। ধীরে ধীরেই এগোচ্ছিলেন তারা। এতে আবারো ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। বলের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে রান না তুলতে পারলেও, স্কোর বোর্ড সচল রেখেছিলেন তারা। কিন্তু ৩৭তম ওভারে রান আউটের ফাঁদে পড়ে নিজের ইনিংসে সমাপ্তি টানেন সাইফউদ্দিন। ২৯ বলে ৮ রান করেন তিনি। মাহমুুদুল্লাহ’র সাথে ৫০ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়েন তিনি।

এরপর বাংলাদেশের শেষ ৩ উইকেট টানা তিন বলে তুলে নিয়ে অভিষেক ম্যাচেই হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন মাদুশানকা। ৪০তম ওভারের পঞ্চম ও শেষ বলে এবং ৪২তম ওভারের প্রথম বলে যথাক্রমে মাশরাফি, রুবেল ও মাহমুদুল্লাহকে শিকার করেন মাদুশানকা। ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৯২ বলে ৭৬ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। মাদুশানকা ৩টি, চামিরা ও ধনানঞ্জয়া ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন শ্রীলংকার থারাঙ্গা। টুর্নামেন্ট সেরা হন একই দলেল থিসারা পেরেরা।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:০৩ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮, শনিবার
ডিএইচ

The post পরাজয় নিয়ে কাদেরকে দুষলেন মাশরাফি? appeared first on Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস.



This post first appeared on ChandpurTimes, please read the originial post: here

Share the post

পরাজয় নিয়ে কাদেরকে দুষলেন মাশরাফি?

×

Subscribe to Chandpurtimes

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×