Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

মৃতদের স্মরণ করার সর্বোত্তম পন্থা

আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও ঘনিষ্ঠজনের মধ্য থেকে যাঁরা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন, তাঁদের কথা সবার মনে পড়ে। তাঁদের জন্য কিছু করতে ইচ্ছা হয়।

ইসলামী শরিয়তে মৃতদের স্মরণের সঠিক দিকনির্দেশনা রয়েছে। এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিবস বা সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। কোনো অনুষ্ঠানেরও প্রয়োজন নেই। নিম্নে এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হলো—

এক. মৃত ব্যক্তির ভালো কাজগুলো আলোচনা করা। ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯০০)

দুই. তাদের জন্য দোয়া করা। পবিত্র কোরআনে ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া এভাবে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে আমার প্রতিপালক! যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ঈমানদারকে ক্ষমা করুন। ’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৪১)

আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যখন মানুষ মারা যায় তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তিনটি আমলের ফায়দা ভোগ করে—সদকায়ে জারিয়া; এমন জ্ঞান, যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় এবং ওই সুসন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৬৩১) তিন. দান-সদকা করা।

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, সাদ ইবনে উবাদা (রা.)-এর অনুপস্থিতিতে তাঁর মা ইন্তেকাল করেন। তিনি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, আমার অনুপস্থিতিতে আমার মা মারা গেছেন। আমি যদি তাঁর পক্ষ থেকে সদকা করি, তবে কি তাঁর কোনো উপকারে আসবে? তিনি বলেন, হ্যাঁ। সাদ (রা.) বলেন, “আমি আপনাকে সাক্ষী রেখে বলছি যে আমার ‘মিখরাফ’ নামক বাগানটি আমার মায়ের জন্য সদকা। ”(বুখারি, হাদিস : ২৭৫৬)

চার. মাঝেমধ্যে মৃতদের কবর জিয়ারত করা। হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি এর আগে তোমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, তবে এখন থেকে এর অনুমতি দিলাম, তোমরা কবর জিয়ারত করো। কেননা তা তোমাদের দুনিয়াবিমুখ করে এবং পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৫৭১)

আমাদের দেশে মৃত ব্যক্তির নামে তিন দিনের দিন কুলখানি নামে এবং ৪০ দিনের দিন চল্লিশা নামে যে খানার আয়োজন করা হয়, তা ইসলামসম্মত নয়। তবে হ্যাঁ, মৃত ব্যক্তির ঈসালে সওয়াবের নিয়তে গরিবদের খাওয়ানো বৈধ। কিন্তু আমাদের দেশে যেভাবে প্রথা বানিয়ে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে খানার আয়োজন করা হয়, ধনী-গরিব সবাইকে আমন্ত্রণ করে এক বিশাল অনুষ্ঠান করা হয়। সামাজিক কারণে অনেকে অর্থ না থাকলেও এমনটি করতে বাধ্য হয়। এ পদ্ধতি গলদ ও গর্হিত। কোরআন, হাদিস ও সাহাবাদের জীবন থেকে তা প্রমাণিত নয়। কোথাও কোথাও লোক দেখানোর জন্য প্রতিযোগিতামূলক খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ ধরনের খানা খেতে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘মহানবী (সা.) দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অহংকারীর খাদ্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৭৫৪)

আরো স্পষ্ট হওয়া দরকার, যে কারো মৃত্যুর পর মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে খাওয়া তো দূরের কথা, উল্টো তিন দিন মৃতের শোকাহত পরিবারের জন্য খাবারের আয়োজন করার নির্দেশ করেছে ইসলাম। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩১৩৪) আমাদের সমাজে চল্লিশা, কুলখানি ইত্যাদির মাধ্যমে উল্টো তাদের কাছ থেকে খাবার আদায় করা হয়! জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘আমরা [রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে] মৃত ব্যক্তির বাড়ির আনুষ্ঠানিকতা ও খাদ্যায়োজনকে (শরিয়তনিষিদ্ধ) মাতম বলে গণ্য করতাম। ’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৬৮৬৬, ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬১২)

ইসলাম ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১ :১০ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, রোববারs
এইউ

The post মৃতদের স্মরণ করার সর্বোত্তম পন্থা appeared first on Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস.



This post first appeared on ChandpurTimes, please read the originial post: here

Share the post

মৃতদের স্মরণ করার সর্বোত্তম পন্থা

×

Subscribe to Chandpurtimes

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×