Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

ঘুম কমানোর উপায় – Ways to Reduce Sleep

ঘুম বা নিদ্রা হচ্ছে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যখন সচেতন ভাবে কোনো কাজ বন্ধ থাকে বা সবরকম কাজ করা হয়ে যাবার পর। পৃথিবী জুড়ে চালানো বিভিন্ন গবেষণায় তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে, কারা বেশি রোগাক্রান্ত হয়। যারা কম ঘুমায় কিংবা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ঘুমায় তারাই বেশি রোগাক্রান্ত হয় এবং কম বাঁচে। প্রতিটি মানুষের বয়সভেদে ঘুমের সময় বিভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন বয়ঃসন্ধি কালের আগ পর্যন্ত প্রতি রাতে ১১ ঘণ্টা ঘুমানোর জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। নবজাতকের ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন অন্তত ১৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন নবজাতকের। কারণ ঘুমের সময় গ্রোথ হরমোন নিঃসৃত হয় যা নবজাতকের বৃদ্ধিতে খুবই প্রয়োজন। এছাড়া যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৯ বছর তাদের প্রতিরাতে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ঘুমের অভাবে শরীরে কিছু প্রভাব পড়ে। যেমন- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করে এবং টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, বোধশক্তি কম হয় এবং স্মৃতিভ্রম দেখা দিতে পারে। ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়। ঘুম শরীরকে চাঙ্গা করে পরবর্তী দিনের কাজের জন্য আমাদের তৈরি করে। অনেকেই আছেন যারা ঘুম কম হওয়ার বা না হওয়ার সমস্যায় ভোগেন। এ কারণে শরীরে অবসাদ ও ক্লান্তি তৈরি হয় যাতে কর্মদক্ষতা কমে যায়। এই সমস্যার কারণে অনেকে ঘুমের ওষুধের উপর নির্ভর করে থাকেন। তবে বেশি ঘুমের ওষুধ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিছু অভ্যাস যা ঘুম আসতে আপনাকে সাহায্য করবে। তবে আজকের বিষয় বস্তুটা ঘুম নিয়ে হলেও  একটু আলাদা, সেটা হল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘুমের দরকার একথা ঠিকই কিন্তু বেশি ঘুম আমাদের জীবনে নানান কাজের ক্ষতি হয়ে থাকে। বাংলায় একটা কথা আছে যারা বেশি ঘুমায় তাদের ভাজ্ঞও ঘুমিয়ে থাকে।  তাহলে চলুন আজকের আমাদের আলোচনা বিষয়বস্তু হলো ঘুম কমানোর উপায়। 

শরীরচর্চা করুন

শরীরের ফিটনেস বাড়াতে ব্যায়ামের থেকে ভালো কিছু হয় না। ব্যায়াম করুন, দৌড়ান। বা কোনোটাই জোপডি সম্ভব না হয়ে থাকে তাহলে আপনি যোগাও করতে পারেন।  বাড়িতেই শরীরচর্চার কিছু যন্ত্রপাতি কিনে রাখুন। সেগুলো দিয়ে ব্যায়াম করুন যদি জিমে যাবার সময় না পান। এর সাথে মেডিটেশনও করুন। সকালে বেশীক্ষণ না, ১০ মিনিটের জন্য মেডিটেশন করুন। প্রথমে চোখ বন্ধ রেখে, লম্বা শ্বাস নিন। এবার মনে মনে ৫ অবধি গুনুন। শ্বাস ধরে রেখে। এবার ৫ বলা হয়ে গেলে, ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।

রাতে ভালো করে ঘুম দকার

রাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। তাই রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ুন যাতে এই সময়টা ঘুমটা হয়। রাতে ঠিকমত ঘুম না হাওয়া, বা যথেষ্ট ঘুম না হলেও দিনে ঘুম পায়। মনে রাখবেন সারাদিন কাজের পর রাতে শরীরের দরকার উপযুক্ত রেস্ট। সেটা পাওয়ার আগেই যদি আপনি আবার কাজ করতে শুরু করে দেন, তাহলে সারাদিন ক্লান্ত, লাগবেই। শরীর পরিমিত রেস্ট পেলে, তবেই আপনাকে পরের দিনের কাজের জন্য রেডি করতে পারবে। এনার্জি দিতে পারবে। তাই রাত অবধি জেগে থাকার অভ্যাস বন্ধ করুন।

ফোন বন্ধ রাখুন

আমাদের বর্তমান জীবনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল মোবাইল ফোন, সেটা যেমন অনেক কার্যকর আবার তেমনি সর্বনাশের মাথা। এখনকার পারি সবাই ঘুমোতে গিয়ে ফোন এর দিকে তাকিয়ে ইটা ওটা করতে থাকি বা দীর্ঘক্ষণ ধরে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা চ্যাট করে থাকি। র তাছাড়া রাত শুতে যাবার সময়ে বা ঘুমোতে যাবার সময়ে ফোন নিয়ে শোয়া বা ঘুমটা আমাদের এখনকার অভ্যাস। রাতে ফোন নিয়ে শোয়াটাও আপনার সারাদিন ঘুম পাওয়ার একটা অন্যতম কারণ। কারণ রাতে ফোননিয়েই অনেকটা সময় কেটে যায়। রাতে আপনি ঘুমোন কত দেরীতে সেটা খেয়াল আছে? তাই রাতে তো পর্যাপ্ত বিশ্রাম হয় না। সেই জন্যই সকালে ঘুম ভাঙতেই চায় না। আর সারাদিন ঘুম পায়। এছাড়াও আমাদের ঘুম গাঢ় হবার জন্য মেলাটোনিন নামক হরমোনের ক্ষরণ হয়। ঘুম যত গাঢ় হয়, তত এই হরমোনটির ক্ষরণ হয়। ফোন থেকে একধরণের রে বেরোয়, যেটা এই হরমোনের ক্ষরণে বাধা দেয়। ফলে রাতের অনিদ্রা সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। ব্রেন ক্যান্সার পর্যন্ত ঘটাতে পারে। তাই ঘুমোবার আগে ফোন বন্ধ করে দিন বা দূরে রাখুন। মাথার পাশে ফোন নিয়ে একদম নয়।

জল খান

ঘুম থেকে উঠেই এক থেকে দু’গ্লাস জল খান। জল শরীরকে সতেজ করে তোলে। মস্তিষ্কও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। ঘুম ঘুম ভাব অনেকটাই কেটে যায়। এছাড়াও বেশী ঘুম পেলে, চোখে ঠাণ্ডা জলের ঝাপটা দিন। ঘুম থেকে উঠেই চোখে মুখে ঠাণ্ডা জলের ঝাপটা দিন। এতে ঘুম একদম কেটে যায় এবং হালকা গরমজলে ভালো করে স্নান করুন। ভালো করে স্নান করলে, শরীর অনেকটা ফ্রেশ লাগে। এছাড়াও অ্যালার্ম যেটা সেট করে রাখবেন, সেটা যেন বেশ জোড়ে বাজে। কানে লাগে। এরম শব্দ কানের কাছে কাছে হঠাৎ বেজে উঠলে ঘুম ভাঙতে বাধ্য। সকালে হালকা গরমজল করে নিয়ে ভালোভাবে স্নান করুন। তবে খুব গরমে তো গরমজল সম্ভব নয়, তখন স্নানের জলে গোলাপজল মিশিয়ে নিন। গোলাপজল শরীরকে তরতাজা রাখতে সাহায্য করে।

চা, কফি

চা, কফি তো এমনিতেই সকালে খান। কিন্তু ঘুম পেলে একটু বেশীই খান। মানে সকালের পর দুপুরের দিকে আরেকবার খান। এতে অতিরিক্ত ঘুমের সমস্যা কমবে। তবে সন্ধ্যাবেলা খাবেন না। তাহলে আবার রাতে সহজে ঘুম আসবে না। রাতে শোবার ৬ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত চা, কফি খাবেন না। এই চা, কফির সাথে একটা হেলদি ব্রেকফাস্ট মেনে চলুন। এমন কিছু খাবার খান, যেটা শরীরে এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করবে। যেমন রুটি, সাথে কলা বা অন্য ফল, টকদই এসব খান। বিটের রস খান মাঝে মাঝে। এটা এনার্জি বাড়াতে অসাধারণ কাজ করে। এছাড়াও বেশী করে প্রোটিন জাতীয় খাবার খান। এবং গরমকাল আসছে তাই প্রচুর পরিমাণে জল খান যেটা শরীরে এনার্জি ধরে রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়াও রাতে হালকা খাবার খান। কারণ গরমে প্রায়ই রাতে বদহজম হবার সম্ভবনা থাকে। তাই রাতে ভালো করে রিলাক্সে ঘুমোতে হালকা খাবার খান। যেটা সহজে হজম হয়ে যাবে।

ঘুমোবার আগে ঘরের পরিবেশ ঠিক করুন। লাইট বন্ধ করে দিন। কোনো শব্দ যেন না আসে। শান্ত সুন্দর পরিবেশ হলে তবেই ঘুম আসবে। অতিরিক্ত টেনশন একদম নয়। সবকিছু ভুলে রাতে শরীরকে রেস্ট দিন। মনকে রিলাক্সে রাখতে মেডিটেশন করুন।

সংক্ষেপে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা 

দুপুরে ঘুমে মরে গেলেও ঘুমাবেন না । রাতের ঘুমটা ভালোমতঘুমানোর চেষ্টা করুন। সারাদিন অল্প অল্প করে চার থেকে পাচবার খাবেন, হেভি মিল ঘুম বাড়ায়। হেভি মিল সম্পূর্ণ রুপে বর্জন করুন। লাল মাংশ, মিষ্টি,ভাত,আম -এগুলো ঘুম বাড়ায়-যথাসম্ভব এভয়েড করুন। শুয়ে শুয়ে বই পড়ার অভ্যাস বাদ দিন। রেগুলার আধাঘন্টা ব্যায়াম করুন -ঘুমানোর আগে-নিদেনপক্ষে হাটুন। নেশাজাতীয় দ্রব্য বর্জন করুন।

শেষ কথা 

অ্যালার্ম বেজে বেজে বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তবুও ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছা করেই না। কিংবা যদিও বা কষ্ট করে ওঠা হয়, কিন্তু ঘুম যেন ছাড়তে চায় না। ঘুম ঘুম ভাব, বিশেষ করে দুপুরে তো চোখে ঘুম ছাড়তেই চায় না। বা দুপুরের পেট ভোরে ভাত খাবার পর তো আর কোথায় নেই সে কেউ অফিস এই থাকুক বা বাড়িতেই থাকুক না কোনো ঘুম যেন ওই সময়গুলোতে তারা করে বেড়ায়।  কি, ঠিক বললাম তো? এই সমস্যা অনেকেরই। ওপরের টিপস গুলো খেয়াল রাখবেন আর নিজের জন্য একটু ভাবুন।  হ্যা একথা সত্যি যে ঘুম তা খুউব দরকার। ওই যে কোথায় আছে না কোনো কিছু অতিরিক্তি ভালো না তাই ঘুমটাও অতিরিক্ত ভালো না। অতিরিক্ত ঠান্ডার প্রবণতা  শারীরিক দুর্বলতা  শরীরের গুরত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিতে যেমন;-লিভার, কিডনি  ইত্যাদিতে প্রবলেম থাকলে।  আরো বেশ কিছু কারণ। যাই হোক উপরিউক্ত সমস্যা গুলি আছে কিনা খেয়াল করুন এবং থাকলে তার ট্রিটমেন্ট নিন। না থাকলে নিয়মত ব্যায়াম করুন, আশা করি ঠিক হয়ে যাবেন  সবচে বেশী জরুরী হলো মনের জোড় । will power টাকে খুব তীব্র করুন। আর যা-ই হোক ছয় ঘণ্টার কম ঘুম ভুলেও ঘুমাবেন। আপনার সুস্থতা কামনা করছি। ধ্যান রাখবেন ও ধ্যান করবেনও। ভালো থাকবেন ভালো রাখবেন। ধন্যবাদ।

লেখক – শান্তনু পাল 

The post ঘুম কমানোর উপায় – Ways to Reduce Sleep appeared first on Chalo Kolkata.



This post first appeared on Chalo Kolkata, please read the originial post: here

Share the post

ঘুম কমানোর উপায় – Ways to Reduce Sleep

×

Subscribe to Chalo Kolkata

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×