Get Even More Visitors To Your Blog, Upgrade To A Business Listing >>

ব্রণ এর চিকিৎসা ও ঘরোয়া পদ্ধতি – Home Remedies For Pimples

বয়ঃসন্ধিকাল , আমাদের কৈশোর থেকে যৌবনে যাওয়ার  সময় । এই সময় থেকেই আমদের শারীরীক এবং মানসিক নানান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ব্রণ শব্দটার সাথে আমরা মোটামুটি সবাই পরিচিত। ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জনের এই রোগটা দেখা যায়। কখনো কখনো  কুড়ি কিংবা তিরিশ বছর বয়সেও এই রোগ দেখা যায়। এর স্থায়ীত্ব দীর্ঘকালীনও হতে পারে । ব্রণ নিয়ে সকলেই চিন্তিত কারণ, আমাদের মুখমন্ডলের সৌন্দর্য আমাদেরকে আকর্ষণীয় করে তোলে।বয়ঃসন্ধিকালে এই ত্বকের পরিচর্যার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। কিন্তু সবার আগে জানা দরকার যে ব্রণ আসলে ঠিক কি? আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।’

ব্রণ কি? কেন হয়? ব্রণ থেকে মুক্তির উপায় কি 

প্রথমেই আমরা জানবো ব্রণ কি? 

সেবা সিয়াস গ্রন্থি সেবাম নামে এক প্রকার তৈলাক্ত পদার্থ নিঃসরণ করে যা ত্বককে মসৃণ রাখে। কোনো কারণে সেবা সিয়াস গ্রন্থির নালির মুখ বন্ধ হয়ে গেলে সেবাম নিঃসরণের বাধার সৃষ্টি হয় এবং তা ভেতরে জমে ফুলে উঠে যা ব্রণ (acne) নামে পরিচিত। ব্রণ তৈরি হওয়ার পর্যায়ে এর মুখ বন্ধ থাকায় সাদাটে দেখায়। বন্ধ নালির মুখে জমা কৃত কোষগুলি আস্ত আস্তে কালো হয়ে গেলে তাকে কালো ফোঁটা বলে। প্রায়ই ব্রণের চারপাশে প্রদাহ শুরু হয় এবং এর রং লাল দেখায়। এর উপর জীবাণু সংক্রমণ ঘটলে পুঁজ তৈরি হয়। বাইরে থেকে এদের ছোট দেখালেও এরা বেশ গভীর হতে পারে। এজন্য ব্রণে সংক্রমণ সেরে গেলেও মুখে দাগ থেকে যেতে পারে।

ব্রণ কেন হয়?

ব্রণের সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত না হলেও সাধারণত দেখা যায় হজমের গোলমাল, সুরাপান, বয়ঃসন্ধিকালে কিংবা অন্যান্য কারণে অনেকের মুখে ব্রণ হয়।আবার অনেকেই বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ব্রনের অনেকগূলো কারণের ভিতর বংশগত কারণ একটি অন্যতম কারণ। প্রোপাইনি ব্যাকটেরিয়াম একনিস নামক এক ধরনের জীবাণু স্বাভাবিকভাবেই লোমের গোড়াতে থাকে। এন্ড্রোজেন হরমনের প্রভাবে সেবাম-এর নিঃসরণ ( মাথা, মুখ, ইত্যাদি জায়গায় তেলতেলে ভাব ) বেরে যায় এবং লোমের গোড়াতে উপস্থিত জীবাণু সেবাম থেকে ফ্রী ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করে। অ্যাসিডের কারণে লোমের গোড়ায় প্রদাহের সৃষ্টি হয় এবং লোমের গোড়ায় কেরাটিন জমা হতে থাকে।

ব্রণ হলে কী করবেন

দিনে দুই-তিনবার হালকা সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোবেন।  ব্রণে হাত লাগাবেন না।  তেল ছাড়া অর্থাৎ ওয়াটার বেসড মেকআপ ব্যবহার করবেন।  মাথা খুশকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।  পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং নিজের জন্য আলাদা তোয়ালে রাখুন।  রাতে ঠিকমতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন।  মানসিক চাপ পরিহার করুন।  প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি খান ও প্রচুর পানি পান করুন।  কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তা দূর করতে হবে।  ঝাল-মশলাযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।  পুষ্টিহীনতায় ভুগলে প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

ব্রণ হলে কী করবেন না 

রোদে বেরুবেন না, রৌদ্র এড়িয়ে চলুন।  তেলযুক্ত ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন না।  ব্রণে হাত লাগাবেন না। ব্রণ খুঁটবেন না।  চুলে এমনভাবে তেল দেবেন না যাতে মুখটাও তেলতেলে হয়ে যায়।  ব্রণ হলে একেবারেই আচার খাবেন না। তবে মিষ্টি চাটনি খেতে পারেন।  বেশি পরিমাণে নিরামিষ খাবার খান। আমিষ খাবার যতটা সম্ভব না খাওয়ার চেষ্টা করুন।  ডেইরি প্রোডাক্টসের মধ্যে হরমোনাল উপাদান বেশি পরিমাণে থাকে বলে তা খুব সহজে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এ কারণেই পনির, দুধ এবং দই কম খান।  কোল ড্রিঙ্কস খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দিন। আয়ুর্বেদের মতে অতিরিক্ত ক্রোধের ফলে শরীরে পিত্ত সঞ্চিত হয়। তাই ক্রোধ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন।

ঘরোয়া পদ্ধতি্তে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দুর করার কিছু সহজ উপায়

ব্রণের আসল কারণ সম্পর্কে ডাক্তার থেকে বৈজ্ঞানিক সবাই বিষয়টিকে বয়ঃসন্ধিকালের ব্যারাম  বলতে নারাজ। তাঁদের মতে হজমের গণ্ডগোল, সূরাপান, অনিয়মিত খাওয়া দাওয়া যেমন দায়ী তেমনই বংশগত কারণও এর অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়। প্রোপাইনি ব্যাকটেরিয়াম একনিস নামের একধরণের জীবাণু লোমের গোড়াতেই থাকে। এন্ড্রোজেন হরমোনের প্রভাবে সেবাম নিঃসৃত হয় , ফলে  মুখে, নাকের কাছে তেলতেলে ভাব বেড়ে যায়। উক্ত জীবাণু সেবাম থেকে ফ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরী করে। সেই অ্যাসিড জমে লোমের গোড়ায় কেরাটিন জমা হয় এবং প্রদাহের সৃষ্টি হয়।

1. কাঁচা হলুদ এবং চন্দনকাঠের গুঁড়ো ব্রণের জন্য খুবই কার্যকর দুটো উপাদান। সমপরিমাণ বাটা কাঁচা হলুদ এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো একত্রে নিয়ে এতে পরিমাণ মত জল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করতে হবে।মিশ্রণটি এরপর ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখে কিছুক্ষন পর শুকিয়ে গেলে মুখঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই মিশ্রণটি শুধুমাত্র ব্রণদূর করার কাজ করে না বরং ব্রণের দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।

2. আপেল এবং মধু এর মিশ্রণ হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া পদ্ধতি। প্রথমে আপেলের পেষ্ট তৈরি করে তাতে ৪-৬ ফোঁটা মধু মিশাতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে এরপর মুখ ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখে এবং কমপ্লেকশন হালকা করে। সপ্তাহে ৫-৬ বার এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি কয়েকদিনের মধ্যে পরিবর্তনটা অনুভব করতে পারবেন।

3. ব্রণের জন্য তুলসি পাতার রস খুব উপকারী। কারণ তুলসি পাতায় আছে আয়ূর্বেদিক গুণ। শুধুমাত্র তুলসি পাতার রস ব্রণ আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে রেখে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর ঈষদুষ্ণ গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

4. প্রথমে চন্দন কাঠের গুড়োঁর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এরপর এতে ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস মিশাণ। গোলাপজল অনেকের ত্বকের সাথে এডজাষ্ট হয় না।তারা সেইক্ষেত্রে গোলাপ জলের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারেন।এই পেষ্ট আপনার ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে।সপ্তাহে ৩-৪দিন ব্যবহার করতে পারলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।

5. এছাড়া রাতে শোয়ার আগে ডিমের সাদা অংশ ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় মেসেজ করে সারারাত রাখতে পারেন।এটি আপনার ত্বকের খসখসে ভাব দূর করে।সবচেয়ে ভাল হয় যদি এর সাথে লেবুর রস যোগ করা যায়।আপনি এটি সারারাতও রাখতে পারেন আবার আধ ঘন্টা পরও ধুয়ে ফেলতে পারেন।

6. প্রতিদিন ৯-১০ গ্লাস জল খাবেন।

7. প্রতিদিন রাতের খাবারের পর যেকোন ধরনের মৌসুমি ফল খান। এটি আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে।যতটা সম্ভব তেলযুক্ত বা ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার পরিহার করুন।

8. সবসময় বাহির থেকে আসা মাত্র মুখ ফেসওয়াস দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া হালকা গরম জলের  স্টীম ভাপ নিতে পারেন।দেখবেন ত্বকে জমে থাকা ধুলোবালি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

ব্রণের মহোঔষধ “জায়ফল”এর ব্যবহার  

রন্ধন শিল্পে যারা পারদর্শী তাদের কাছে অতিপরিচিত একটি মসলার নাম। খাবারের স্বাদ আর সুগন্ধ বৃদ্ধিতে আর মাংস নরম করতে যার কোন জুড়ি নেই। এবার আসি জায়ফলের একটি যুগান্তকারী গুনের কথায়। সেই গুণটি হল মুখের ব্রণের চিকিৎসায় এর ব্যবহার। জায়ফলের মধ্যে “মেইস” নামক একটি উপাদান আছে, যা ফাংগাস এবং ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী। ব্রণের মূল কারণ হলো মুখের ত্বকে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাংগাসের আক্রমণ। সুতরাং বুঝতেই পারছেন জায়ফল কিভাবে ব্রণের বিরুদ্ধে কাজ করে। প্রথমে একটি বাটিতে জায়ফল গুড়া, মধু এবং একটু দুধ নিন।এবার ভালোকরে এগুলো এমনভাবে মেশান যেন তা পেস্টের মতো হয়। এইরকম পেস্ট বানিয়ে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ব্রণে আক্রান্ত জায়গাগুলোতে ভালভাবে লাগান।পরদিন সকালে হালকা ভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন।এভাবে প্রতিদিন ব্যবহারে আপনি নিজেই ফলাফল টের পাবেন। এই পেস্টটিকে আপনি স্পট ক্রিম হিসাবে মুখের দাগ দূর করতেও ব্যবহার করতে পারেন তবে যারা বহুদিন যাবত ব্রণ সমস্যায় ভুগছেন এবং কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না, তারা আর দেরি না করে কোন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

শেষ কথা 

ব্রণ হল সব থেকে বাজে সমস্যা।  তার কারণ হল মুখমন্ডলের ওপর আমাদের যদি কিছু হয়ে থাকে তার জন্য আমাদের খুউব সমস্যা হয়ে থাকে আর সেটা হলো একটা সৌন্দর্য। মুখের দাগ, ফুসকুড়ি, ফোড়া, ইত্যাদি হলে আমরা নিজেদের বাড়ির চার দেওয়ালে লুকিয়ে রাখতে চাই। তবে লুকিয়ে রাখার দিন শেষ ওপরের উল্লেখিত জিনিসগুলো যদি একবার দেখে আর জিনিস  বুঝে করতে পারেন ব্যাস সমস্যাটাই তো আর থাকবে না। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। 

লেখক – শান্তনু পাল 

The post ব্রণ এর চিকিৎসা ও ঘরোয়া পদ্ধতি – Home Remedies For Pimples appeared first on Chalo Kolkata.



This post first appeared on Chalo Kolkata, please read the originial post: here

Share the post

ব্রণ এর চিকিৎসা ও ঘরোয়া পদ্ধতি – Home Remedies For Pimples

×

Subscribe to Chalo Kolkata

Get updates delivered right to your inbox!

Thank you for your subscription

×