দেশের সবচেয়ে পুরনো মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এখনও দরদাম কিছুই ঠিক না হলেও বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা অনেকটা এগিয়ে গেছে।
ভিয়েতনামের অপারেটর মোবিফোন বর্তমানে আর্থিক সংকটে থাকা সিটিসেল কেনার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে।
বিদেশি কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করতে ও অপারেটরটির বর্তমান অবস্থা দেখতে এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগস্টও সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই সিটিসেল কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে ভিয়েতনামি কোম্পানিটি ঢাকায় এসে চুক্তি করতে পারে।
ইতিমধ্যে মোবিফোনের কর্মকর্তারা টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আবদুল লাতিফ সিদ্দিকী এবং বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, সিটিসেলের অংশীদার সিংটেল অনেক দিন থেকে থাকতে চাইছে না। তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ সাড়ে ৪৪ শতাংশ। সিংটেলের শেয়ারের পুরোটাই মোবিফোন কিনতে চায়। সেই সঙ্গে নিতে চায় আরওএকটি বড় অংশও।
এর আগে এক সময় দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব অপারেটর ভিয়েতটেল বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব অপারেটর টেলিটক কেনার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছিল। পরে অবশ্য নানা কারণে তারা পিছিয়ে গেছে।
সূত্র জানিয়েছে,গত তিন দিন মোবিফোনের অন্তত তিন জন কর্মকর্তা ঢাকায় অবস্থান করছেন। তারা সিটিসেলের বিভিন্ন অবকাঠামো দেখছেন। পরে দেশে ফিরে গিয়ে এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন।
সিটিসেলের মূল উদ্যোক্তা ও মালিক পক্ষের বড় অংশীদার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এখনও সব কিছু চূড়ান্ত হওয়ার কথা তিনি শোনেনি।
সিটিসেল ১৯৮৯ সালে লাইসেন্স পেলেও অপারেশন শুরু করেছে ১৯৯৩ সাল থেকে। বর্তমানে তাদের গ্রাহক ১৩ লাখের কিছু বেশি। এক সময় অপারেটরটি ২০ লাখ গ্রাহক পেলেও এখন তা অনেকটা কমে এসেছে।
সূত্র জানিয়েছে, সিটিসেলের আর্থিক অবস্থা বর্তমানে অনেকটা নাজুক। অনেক ক্ষেত্রে কর্মীদের বেতন বোনাস দিতেও সমস্যা হচ্ছে। মাঝে সিটিব্যাংকথেকে ঋণ নিয়ে বেতন দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ও মোবিফোনের কর্মকর্তারা অবহিত হয়েছেন।
অন্যদিকে বর্তমানে সিটিসেলের কাছে বিটিআরসির পাওনার পরিমাণ ২২৯ কোটি টাকা। সর্বশেষ কমিশন এ অর্থ পরিশোধে তিন মাস সময় দিয়েছে।
এর আগে গত ২ ডিসেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের কাছে বিভিন্ন খাতে ২৪৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা আদায়ে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে নোটিশ দেয় বিটিআরসি। তখন বকেয়া পরিশোধ করা না হলে লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া করা হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
পরে অবশ্য মার্চ মাসে সাড়ে ২৬ কোটি টাকা পরিশোধ করে ছয় মাস সময় নেয় সিটিসেল। এখন আরো সময় নিল অপারেটরটি।
সিটিসেল বলছে, তাদের মোট ১০ মেগাহার্ডজ স্পেকট্রাম পাওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে তারা মাত্র সাড়ে ছয় মেগাহার্জ স্পেকট্রাম পাচ্ছে। এ কারণে নতুন বিনিয়োগও আসছে না। নতুন বিনিয়োগে না আসায় অপারেটরটি টাকা জোগাড় করতে পারছে না।
তবে এবার মোবিফোনের সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেলে সব দেনাপাওনা একবারে পরিশোধ করে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।
এর আগেও সিটিসেল কেনার বিষয়ে কয়েকটি বিদেশি কোম্পানি আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি।
Related Articles
This post first appeared on .....:::::||||| DaMalChele.Com |||||:::::....., please read the originial post: here